দেশের রাজধানীতে আবার সেই বুরারি কাণ্ডের ছায়া দেখা গেল। এবার দিল্লির বসন্তকুঞ্জে একই পরিবারের ৫ সদস্যের দেহ উদ্ধার হল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, চারজনকে খুন করে একজন আত্মহত্যা করেছেন।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে মৃতেরা হলেন, হীরালাল শর্মা (৪৬) এবং তাঁর চার কন্যা— নীতু (২৬), নিক্কি (২৪), নীরু (২২) এবং নিধি (২০)। হীরালাল পেশায় ছিলেন কাঠের মিস্ত্রি। তাঁর চার কন্যার মধ্যে দু’জন বিশেষ ভাবে সক্ষম। আর্থিক অনটনের কারণে হীরালাল মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতদের কারও শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। হীরালালের ফ্ল্যাট থেকে তিনটি বিষের প্যাকেট, পাঁচটি গ্লাস এবং একটি সন্দেহজনক তরল পদার্থ পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পেশায় ছুতোর হীরালাল ওই বাড়িতে চার মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। এক বছর আগে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর চার মেয়েই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। একজনের দৃষ্টিশক্তি, একজনের হাঁটাচলায় সমস্যা। বাকিদের সমস্যা ঠিক কী তা জানা যায়নি।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে নিজের বাড়িতে ঢুকছেন হীরালাল। অন্য কাউকেই ওই বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়নি। এর পর থেকে বাড়ির ভিতর থেকে কয়েকদিন ধরে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দেন প্রতিবেশীরা। দমকলের সাহায্যে দরজা ভেঙে সকলের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেখা যায়, একটি ঘরে পড়ে রয়েছে চার কন্যার দেহ। অন্য ঘরে হীরালালের দেহ।
হীরালালের ফ্ল্যাট থেকে তিনটি বিষের প্যাকেট, পাঁচটি গ্লাস এবং একটি সন্দেহজনক তরল পদার্থ পাওয়া গিয়েছে।হীরালালের চার কন্যার পেট ও গলায় লাল সুতো বাঁধা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর নেপথ্যে কোনও ধর্মীয় কারণ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই ফ্ল্যাটটিতে হীরালাল ভাড়া থাকতেন। গত কয়েক দিন তাঁদের কাউকে দেখা যায়নি। শুক্রবার সকালে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় ফ্ল্যাটের মালিক পুলিশকে ফোন করেন। এর পর দরজা ভেঙে পাঁচ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে দিল্লির বুরাড়ীতে ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে এক পরিবারের ১১ জন সদস্য আত্মহত্যা করেছিলেন।