লালকেল্লা আগেই ছুঁয়েছিল। এ বার সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে পৌঁছে গেল যমুনার জল। ডুবে গেল রাজঘাট এলাকাও। যার জেরে উদ্বিগ্ন দিল্লির প্রশাসন। দিল্লি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের একটি যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে যমুনার জল শহরের দিকে বয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির কিছু এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন। সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের আধিকারিক এবং বিপুল সংখ্যক কর্মী জলের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছেন।
বৃষ্টিতে যমুনার জল বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দিল্লির বহু এলাকা জলমগ্ন। যমুনার জলে ভেসে গিয়েছে দিল্লির বহু বাড়িঘর, বাজার, রাস্তাঘাট, পর্যটনস্থল। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাজধানীর কোথাও কোমর পর্যন্ত আবার কোথাও বুক পর্যন্ত জল। রাস্তাঘাটে জল জমায় যানচলাচলও বন্ধ হয়েছে।এই পরিস্থিতিতে প্লাবন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনার সাহায্য নিতে আধিকারিকদের নির্দেশ দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কার পরই জল-যন্ত্রণা মোকাবিলায় নামল সেনা। পাশাপাশি, জলসঙ্কটেও জেরবার দিল্লির বাসিন্দারা। ওয়াজ়িরাবাদ, চন্দ্রওয়াল এবং ওখলায় জল শোধনাগার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। জলের জন্য নলকূপের সামনে বালতি নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: Orissa High Court: বিয়ে না হলেও সম্মতির ভিত্তিতে শারীরিক সম্পর্ক ধর্ষণ নয়: ওড়িশা হাই কোর্ট
এই পরিস্থিতিতে দিল্লিবাসীর দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। দিল্লির আইটিও চত্বরে পথে নেমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে হচ্ছে নাগরিকদের। জলমগ্ন ফুটপাথ দিয়ে চলারও উপায় নেই। অগত্যা দুই রাস্তার মাঝে সরু ডিভাইডারের উপর দিয়ে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। যদিও এর মধ্যেই আশার কথাও শুনিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সারা দিন যমুনার জলস্তর স্থিতিশীল ছিল এবং সন্ধ্যার পর থেকে তা কিছুটা নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাতে যমুনার জলস্তর ছিল ২০৮.৬৬ মিটার। শুক্রবার সকালে তা ২০৮.৪৬ মিটারে নেমে এসেছে। ওয়াটার কমিশনের আশা শুক্রবার দুপুরের পর থেকে যমুনার জলস্তর আরও কমবে এবং দুপুর ১ টা নাগাদ তা ২০৮.৩০ মিটারে নেমে যাবে।
দিল্লিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ১৬ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীর সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখারও নির্দেশ দিয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার। দিল্লির বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বৃহস্পতিবার ফ্রান্স সফরে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকেই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করে দিল্লির পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন বলে সরকারি সূত্রে খবর।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার পর্যন্ত সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। বেসরকারি সংস্থাগুলিতে বাড়ি থেকে কাজের (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) পরামর্শ দিয়েছেন কেজরিওয়াল।
আরও পড়ুন: Delhi Crime: পুলিশ পরিচয়ে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ! রাজধানীতে গ্রেফতার যুবক