মঙ্গলবারই বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করেছে ইউনূস সরকার। একদিন যেতে না যেতেই ভারতে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছেন খোদ মোদী। এনিয়ে বুধবার সংবাদমাধ্যমকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এ নিয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নেই।’
গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে দেশ ছেড়েছেন। আপাতত ভারতে থাকলেও এখনও পর্যন্ত ‘কূটনৈতিক’ আশ্রয় পাননি তিনি। এ নিয়ে সংসদে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে। সরকার অবশ্য এখনও হাসিনার অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছে। মুজিবকন্যাকে ফেরত চেয়ে ইতিমধ্যেই ভারতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও। হাসিনাকে প্রত্যার্পণের জন্য ভারতের উপর চাপ বাড়াতে মঙ্গলবার হাসিনার পাসপোর্টও বাতিল করা হয়। তবে বাংলাদেশের এই কূটনৈতিক চালকে কার্যত উড়িয়ে দিল নয়াদিল্লি।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর গুম খুনের বিষয়টি সামনে চলে আসে। পাশাপাশি জানতে পারা যায় ‘আয়না ঘর’-এর বিষয়টি। সরকারের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে, জোর করে কাউকে তুলে নিয়ে গিয়ে ৮ বছর পর্যন্ত গোপন আস্তানায় বন্দি করে রাখা হত। কাউকে হত্যার পর ব্যাগ বেঁধে ফেলে দেওয়া হতো নদীতে। কখনও লাশ ফেলে রাখা হত রেললাইনে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সহ দেশের বিভিন্ন আদালতে শতাধিক হত্যা মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
দিল্লি সূত্রে জানা যাচ্ছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ‘কূটনৈতিক’ নয়, ‘আইনি’। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার স্থায়ী সরকারের কাছে রাজনৈতিক নেতার প্রত্যার্পণ চাইলে তার আইনি দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বাংলাদেশ যে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে ভারত অবশ্যই তার উত্তর দেবে। তবে সেই উত্তর দিতে এত তাড়াহুড়ো ভারত চাইছে না। এই পরিস্থিতিতে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধিতে এটা স্পষ্ট যে তাঁকে কোনওভাবেই বাংলাদেশে পাঠাবে না মোদি সরকার। তবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক যে বজায় রাখা হবে সে বার্তাও বারবার দেওয়া হয়েছে ভারতের তরফে।