বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে এবার কিছুটা বিভাজিত রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট। মূলত Marital rape অপরাধমূলক কাজ কি না সেই প্রসঙ্গে হাইকোর্টে আবেদন জমা পড়েছিল। এদিকে সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কার্যত দ্বিধাবিভক্ত রায় ঘোষণা করল। ৩৭৫ ধারার ২ অনুচ্ছেদের প্রসঙ্গও আসে শুনানিতে। যেখানে বলা হচ্ছে, বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ নয় যদি না স্ত্রী ১৮ বছরের কম হয়।
গত ৭ জানুয়ারি থেকে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বৈবাহিক ধর্ষণ মামলার দৈনিক শুনানি করছে দিল্লি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আলাদা ভাবে পিটিশন দাখিল করে এই মামলায়। তাদের দাবি, বৈবাহিক ধর্ষণও অপরাধ। তাই এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধন আশু প্রয়োজন। দিল্লি হাই কোর্টে দায়ের করা মামলায় বাদীপক্ষের দাবি, বৈবাহিক ধর্ষণ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট ব্যতিক্রমী আইন বিবাহিত মহিলার অবমাননা। তাঁর সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। তাঁরা এ প্রশ্নও তোলেন, কাউকে চড় মারা বা খুন করা অপরাধ, কিন্তু ধর্ষণ অপরাধ নয় কেন?
এদিকে গত ২১শে ফেব্রুয়ারি দুই বিচারপতির বেঞ্চ কোনও রায় দেননি। এদিকে গত ৭ই ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট কেন্দ্রকে তার অবস্থান জানানোর জন্য দু সপ্তাহ সময় দিয়েছিল। তারপরেও কেন্দ্র তার অবস্থান জানাতে পারেনি। পরে আবার কেন্দ্র আদালতের কাছে সময় চায়। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কাছে এনিয়ে তাদের মতামত চাওয়া হয়েছে। এদিকে কেন্দ্র সেদিন কার্যত ত্রিশঙ্কু অবস্থান নেয়। অর্থাৎ এদিকেও নেই আবার ওদিকেও নেই।
আরও পড়ুন: ভারতে স্বপ্নভঙ্গ! দেশ থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেল এলন মাস্কের কোম্পানি Tesla
২০১৭ সালেও কেন্দ্রীয় সরকার এই আবেদনের বিরোধিতা করে জানিয়ে দিয়েছিল, আমাদের দেশ সবকিছু ব্যাপারে পাশ্চাত্যের দেশগুলোকে অনুসরণ করতে পারে না। বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলার আগে অনেকগুলো ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। এদিকে ২০২২ সালে জানুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছিল, সবার সঙ্গে কথা না বলে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলতে পারব না।এদিকে মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি লোকসভায় জানিয়েছিলেন, নারী ও শিশুকে রক্ষা করা কর্তব্য কিন্তু সমস্ত পুরুষই ধর্ষক এটা বলা যায় না। এদিকে গত ৩১ জানুয়ারি অ্যাডভোকেট করুণা নন্দী জানিয়েছিলেন, মহিলাদেরও না বলার অধিকার আছে। জোর করে সঙ্গম করার চেষ্টা স্বামী করলে তা বারণ করার অধিকার মহিলাদের দিতে হবে।
বুধবার ছিল মামলার রায়দানের দিন। কিন্তু দুই বিচারপতি একমত না হওয়ায় নির্দিষ্ট কোনও রায় হয়নি। তাই এই মামলাও সুপ্রিম কোর্টে উঠতে পারে।