বছর কুড়ির তরুণী অঞ্জলি সিংয়ের (Anjali Singh) মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় দিল্লি। শনিবার রাত ২টো নাগাদ কাজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় তাঁর। সুলতানপুরীর কাছে একটি গাড়ি ধাক্কা মেরে তাঁকে ১৩ কিলোমিটার হিঁচড়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাস্তা থেকে অঞ্জলির নগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। তরুণীর পরিবার অভিযোগ তুলেছে, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, তরুণীর যৌনাঙ্গে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। যৌন হেনস্থা হয়নি তাঁর। তরুণীকে গাড়িতে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে পাঁচ যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন, দীপক খান্না, অমিতখান্না, মনোজ মিত্তল, কৃষ্ণ এবং মিঠুন। তাঁদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ অভিযুক্তের মধ্যে মনোজ মিত্তল বিজেপি কর্মী। সুলতানপুরী এলাকায় দলের যাবতীয় কাজকর্ম দেখাশোনা করতেন। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলেছে, “অল্প সময়ের জন্য মিত্তলকে দলের কার্যকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দিন চারেক আগে তাঁকে মঙ্গলপুরী এলাকার সহ-আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়।”
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: রাহুল রাম, পাদুকা বইছে কংগ্রেস কর্মীরা! হিন্দু ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ
দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টির অভিযোগ, মূল অভিযুক্ত মনোজ মিত্তল বিজেপির নেতা। তাই তাঁকে বাঁচাতে গোড়া থেকেই মামলাটিকে সাধারণ দুর্ঘটনা বলে চালাতে চাইছে দিল্লি পুলিশ। আপ-এর বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজের অভিযোগ, “মিত্তল বিজেপির নেতা হওয়ায় দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনা থেকে পুলিশের বড় কর্তারা ওই নেতাকে বাঁচাতে তৎপর হয়ে ওঠেন। ক্লিনচিট দিয়ে দেওয়া হয় মিত্তলকে।”
প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে, সেখানে মৃতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার আগেই কী ভাবে ওই মৃত্যুকে সাধারণ পথ দুর্ঘটনা বলে জানিয়ে দিয়ে অভিযুক্তকে কার্যত ছাড় দিয়ে দেয় পুলিশ। ফলে রাজধানীর ঘটনাতেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে দিল্লি পুলিশের দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজনৈতিক ও জনতার চাপে পড়ে আজ সন্ধ্যায় অমিত শাহের নির্দেশে দিল্লি পুলিশের কাছে ওই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তা দেখে বিরোধীদের বক্তব্য, বিরোধী রাজ্যে কোনও ঘটনা ঘটার পরেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় কেন্দ্র। এখন দিল্লিতে নাকের ডগায় ঘটনা ঘটা সত্ত্বেও দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইতে দু’দিন কেন সময় লেগে গেল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের? কেনই বা অভিযুক্তদের বাঁচাতে এত তৎপর দিল্লি পুলিশের কর্তারা! যথারীতি মুখে কুলুপ স্বরাষ্ট্রকর্তাদের।