Did Swami Vivekananda and Ramana Maharshi time travel?: Netizens react to misinformation in governmenats

Swami Vivekananda: সিপাহি বিদ্রোহের অনুপ্রেরণা বিবেকানন্দ! হাস্যকর ভুল কেন্দ্রীয় সংস্থার

স্বামী বিবেকানন্দের  জীবন সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে হাস্যকর ভুল করে বসল কেন্দ্রীয় সংস্থা প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB)। বলল, “১৮৫৭ সালে সিপাই বিদ্রোহে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ ( Swami Vivekananda )।” অথচ তাঁর জন্ম হয়েছে সিপাই বিদ্রোহের ৬ বছর পর, ১৮৬৩ সালে।

কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীন প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো মোদী সরকারের কাজকর্মের প্রচারে ‘নিউ ইন্ডিয়া সমাচার’ নামক পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশ করে। সেই পত্রিকায় স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব বিষয়ে ‘নতুন ভারতের অমৃত যাত্রা’ নামক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ‘ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা’ শীর্ষক অংশে লেখা হয়েছে, ‘ভক্তি আন্দোলনই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা করেছিল। ভক্তি যুগে স্বামী বিবেকানন্দ, চৈতন্য মহাপ্রভু, রমণ মহর্ষি আধ্যাত্মিক জাগরণ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। এটাই ১৮৫৭-র বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট হিসেবে কাজ করেছিল।’

আরও পড়ুন: ঘুরপথে বাড়তে চলেছে ট্রেনের ভাড়া! জারি করা হয়েছে নোটিস

ইতিহাসবিদেরা বলছেন, ভক্তি আন্দোলনের সঙ্গে স্বাধীনতা আন্দোলনের কোনও সম্পর্কই নেই। ইতিহাসবিদ তনিকা সরকার বলেন, “ভক্তি আন্দোলন হয়েছিল ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র, মন্দির-মসজিদের নিয়ন্ত্রণ, জাতপাতের ভেদাভেদের বিরুদ্ধে। সেখানে কখনও স্বাধীনতা বা সশস্ত্র আন্দোলনের কথা বলা হয়নি।” স্বামী বিবেকানন্দের মতো তামিল ধর্মগুরু রমণ মহর্ষিরও জন্ম সিপাহি বিদ্রোহের অনেক পরে, ১৮৭৯ সালে।

নেট-দুনিয়ার নাগরিকদের কটাক্ষ, স্বামী বিবেকানন্দ কি টাইম মেশিনে চড়ে সিপাহি বিদ্রোহের আগের ভারতে হাজির হয়েছিলেন! কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘ছদ্ম-ইতিহাসবিদেরাই মোদী জমানায় পণ্ডিত হিসেবে সমাদর পান।’ টুইটারে পিআইবির ওই তথ্যের স্ক্রিনশট পোস্ট করে ঘাসফুল শিবির লিখেছে, “স্বামীজির জন্ম হয়েছে ১৮৬৩ সালে। আর সিপাই বিদ্রোহ হয়েছে ১৮৫৭ সালে। তিনি কীভাবে এই বিদ্রোহে অনুপ্রেরণা দিলেন, এটাই বোঝার চেষ্টা করছি?” পিআইবি-কে ট্যাগ করে কটাক্ষ করা হয়েছে, “এব্যাপারে আপনারা কোনও সাহায্য করতে পারেন?” এ নিয়ে অবশ্য কেন্দ্রের তরফে এখনও কোনও জবাব মেলেনি।

ইতিহাসবিদেরা বলছেন, ভক্তি আন্দোলনের সময় পঞ্চদশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দী। তখনও পলাশীর যুদ্ধই হয়নি। স্বাধীনতা আন্দোলন তো অনেক দূরের কথা। তনিকা বলেন, “এটা আসলে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়কালকে আরও পিছনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা। যাতে মুঘলদের বিরুদ্ধে হিন্দু শাসকের লড়াইকেও স্বাধীনতা আন্দোলন হিসেবে দেখানো যায়।”

বস্তুত, সরকারি পত্রিকার ওই নিবন্ধে স্পষ্ট ভাষাতেই লেখা হয়েছে, ‘স্বাধীনতা আন্দোলন শুধু ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ ছিল না। তার আগেও ভারত দাসত্বের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।’ উত্তরপ্রদেশের রাজা সুহেলদেব, যিনি ব্রিটিশ জমানার অন্তত ৮০০ বছর আগে এক মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, তাঁকেও ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে ওই নিবন্ধে। সরকারের বক্তব্য, ‘এই সব অনামী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উপরে প্রচারের আলো সরানোর লক্ষ্যে অমৃত মহোৎসব উদ্‌যাপন শুরু হয়েছে।’

বিরোধীদের অভিযোগ, নিজেদের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রচারেই বিজেপি-আরএসএস স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে ভক্তি আন্দোলনের আধ্যাত্মিক জাগরণকে জুড়ে দিতে চাইছে। এখন হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রতিষ্ঠায় মোদী জমানাতেও সেই আধ্যাত্মিক জাগরণ হচ্ছে বলে বিজেপি-আরএসএস নেতারা বোঝাতে চাইছেন।

আরও পড়ুন: Uttar Pradesh : পদ্মশিবিরে ভূমিকম্প, একদিনে বিজেপি ছাড়লেন মন্ত্রী-সহ ৪ বিধায়ক