জাতীয় দূরদর্শনের অন্যতম প্রধান একটি চ্যানেল হল ডিডি নিউজ। ভোটের আবহে সেই চ্যানলের চেহারা বদলে গেল। ডিডি নিউজের লোগোতে লালের বদলে কমলা রং আনা হয়েছে। আর যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ডিডি নিউজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোষ্ট করে জানানো হয়েছে, নতুন রূপে হাজির ডিডি নিউজ। কিন্তু মান থাকবে পুরানো। ক্যাপশানে লেখা হয়েছে, “নতুন একটি সংবাদ যাত্রার জন্য প্রস্তুত হোন যা আগে কখনও হয়নি। সম্পূর্ণ নতুন ডিডি নিউজের অভিজ্ঞতা নিন। চটজলদি নয় সঠিক খবর, দাবি নয় তথ্য, উত্তেজনা নয় সত্য তুলে ধরার সাহস আছে আমাদের। কারণ ডিডি নিউজে যদি কোনও খবর থাকে, তার মানে সেটি সত্য।“
While our values remain the same, we are now available in a new avatar. Get ready for a news journey like never before.. Experience the all-new DD News!
We have the courage to put:
Accuracy over speed
Facts over claims
Truth over sensationalismBecause if it is on DD News, it… pic.twitter.com/YH230pGBKs
— DD News (@DDNewslive) April 16, 2024
এরপরেই এক্স হ্যান্ডলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, দেশব্যাপী যখন সাধারণ নির্বাচন চলছে তার মধ্যে দূরদর্শনের লোগোর আচমকা গৈরিকীকরণে আমি স্তম্ভিত! এটা পুরোপুরি অনৈতিক, বেআইনি। এই পদক্ষেপ জোরালোভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে, জাতীয় টিভি চ্যানেল বিজেপির দিকেই ঝুঁকে রয়েছে। এই নগ্ন গেরুয়াপন্থী পদক্ষেপ কীভাবে নির্বাচন কমিশন অনুমোদন করল, সে প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। তিনি মনে করছেন, এই পদক্ষেপ আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে। এই সিদ্ধান্ত যাতে প্রত্যাহার করা হয়, দূরদর্শনের পুরানো লোগোর নীল রং যাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনকে তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানান মমতা।
I am shocked at the sudden saffronisation and change of colour of our Doordarshan logo when the national elections are taking place across the country! It is absolutely unethical, grossly illegal, and speaks loudly of the pro-BJP bias of the national public broadcaster!
How… pic.twitter.com/3JnfDhR3Ca
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 20, 2024
প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার এই বদলের পর নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, “জাতীয় সম্প্রচারক দূরদর্শন ঐতিহাসিক ফ্ল্যাগশিপ লোগোকে গেরুয়া রং করেছে! প্রাক্তন সিইও হিসাবে আমি খুবই আশঙ্কিত এই গৈরিকীকরণ দেখে। উপলব্ধি করছি যে, এটা আর প্রসার ভারতী নয়, এটা প্রচার ভারতী।“
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো এবং দুরদর্শনের অভিভাবক সংস্থা প্রসার ভারতীর সিইও পদে ছিলেন জহর সরকার। এদিন জহর সরকার আরও বলেন, ‘এটা কখনওই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না, জাতীয় সম্প্রচারকের রং গেরুয়া করে দেওয়া হচ্ছে। এমন একটি ঐতিহ্যবাহী ব্র্যান্ডের গেরুয়াকরণ কাম্য নয়।’ আচমকা এভাবে রংবদল করে দেওয়া নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করার আওতায় পড়ছে বলেও মন্তব্য করেছে জহর সরকার।
শাসকদল বিজেপি গেরুয়া রংকে বহুল ব্যবহারে অভ্যস্ত। মূলত হিন্দুত্ববাদী সমস্ত দলই গেরুয়া রংকে একচেটিয়া ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ১৯৫৯ সালে যাত্রা শুরু করেছিল দুরদর্শন। এ দেশে কেবল টিভি আসার আগে দুরদর্শনই ছিল বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম। কেবল টিভির রমরমার যুগেও দুরদর্শনের দাপট কমেনি। সরকারি চ্যানেল হওয়ায় গরিমাও বরাবর অক্ষত রয়েছে দুরদর্শনের। তবে লোকসভা ভোটের আবহে হঠাৎ করে নতুন রূপ প্রকাশ্যে আসা অনেকেই অবাক হয়েছেন। ভোটের মুখে এই রংবদলের পিছনে অনেকেই রাজনীতির ছায়া দেখছেন। সুকৌশলে কেন্দ্রের শাসকদলের গেরুয়াকরণ নীতির জেরেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করছে বিরোধীরা।