কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে বিরোধী নেতানেত্রীদের হেনস্তা করার অভিযোগে আগেই সরব হয়েছিল কেন্দ্র বিরোধী দলগুলি (Opposition parties)। এবার সেই অভিযোগ নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল ১৪ বিরোধী দল। ইডি, সিবিআইয়ের ‘অপব্যবহার’, বিরোধী নেতাদের আচমকা গ্রেপ্তার – এসব নিয়ে শুক্রবার মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। গ্রেপ্তারির আগে-পরে কেন্দ্রীয় সংস্থার কী কী নিয়মকানুন রয়েছে, তাও বিশদে জানতে চাওয়া হয়েছে। মামলাটি গ্রহণ করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, আগামী ৫ এপ্রিল এই মামলার শুনানি হবে।
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি সিবিআই এবং ইডির মতো সংস্থাকে বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। মামলাকারী দলগুলির আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, “৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। আমরা চাই এই সংস্থাগুলি গ্রেফতারির আগে এবং গ্রেফতারির পরে যে নিয়মাবলী মেনে চলে, তা লিখিত আকারে প্রকাশ করুক।” দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় মামলাটি নথিবদ্ধ করার কথা বলেন। যার অর্থ মামলাটি শুনতে রাজি হয়েছে শীর্ষ আদালত।
১৪ বিরোধী দলকে এ বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে কংগ্রেস (Congress)। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC), ডিএমকে, আরজেডি, বিআরএস-সহ বিজেপি বিরোধী বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এই সব কটি দলের প্রতিনিধিদেরই ইডি বা সিবিআই জেরার মুখে পড়তে হয়েছে এবং তাদের হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট দল।
আরও পড়ুন: Bihar: পাটনার প্ল্যাটফর্মে চলল পর্ন ভিডিও! ট্রেনের ঘোষণাই শুনতে পেলেন না যাত্রীরা
আপ সূত্রে খবর, সব বিরোধী দলকে এই বিষয়ে একমঞ্চে নিয়ে আসতে উদ্যোগী হয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দলীয় সতীর্থ তথা দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পরেই এই বিষয়ে সক্রিয় হন কেজরি। পাশে পান কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলিকে। আদানি সংক্রান্ত প্রতিবাদে কংগ্রেসের নেতৃত্বে সংসদে কক্ষ সমন্বয় না করলেও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই মামলায় কংগ্রেসের নেতৃত্বে মামলা করে তৃণমূলও। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে একযোগে তদন্ত করছে ইডি এবং সিবিআই। সেখানেও এই সংস্থাগুলির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বাংলার শাসকদল।
অন্যদিকে, জমির বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগে দীর্ঘ সময় ধরে ইডির জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল আরজেডি (RJD) নেতা তথা বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবকে। জিজ্ঞাসাবাদে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। আবার তেলেঙ্গানার ভারত রাষ্ট্র সমিতি অর্থাৎ কেসিআরের মেয়ে কে কবিতাকে দিল্লির ইডি দপ্তরে একাধিকবার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, শাসকদল বিজেপিতে যোগ দিলেই ইডি এবং সিবিআইয়ের করা যে কোনও তদন্ত মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর আগেও সংসদে এই বিষয়ে সরব হয়েছিল বিরোধী দলগুলি। দুর্নীতি প্রসঙ্গে পাল্টা বিরোধীদের উদ্দেশে তোপ দেগেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সিবিআই-ইডিকে ‘অপব্যবহার’ করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির দাবি, সংস্থাগুলি ‘নিরপেক্ষ’ভাবেই কাজ করছে। সেখানে সরকারি কোনও হস্তক্ষেপ নেই।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: দু’বছরের জেল, রাহুল কি সাংসদ পদ খোয়াতে পারেন?