হু হু করে বাড়ছে ভোজ্য তেলের দাম। গত কয়েকদিনে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সরষের তেল, রিফাইন তেলের দাম শুধুই বেড়েছে তা নয়, জোগানও অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এমনকী, যাচাই অনুযায়ী অনেক দোকানে দেওয়াও হচ্ছে না তেল। সব ধরনের তেলের দামই লিটারে প্রায় ২০-৩০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। যার ফলে মাথায় হাত মধ্যবিত্তের।
জানা গিয়েছে, দেশীয় বাজারে পাম তেলের দাম ১০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। এদিকে কেন্দ্র এর আগেই পাম তেল আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দিয়েছে। যার ফলে নতুন করে শুল্ক ছাড়ের কোনও সম্ভাবনা নেই। ফলে দাম আরও বাড়তে পারে। উল্লেখ্য ভোজ্য তেলের প্রায় ৬০ শতাংশই বিদেশ থেকে আসে। রিফাইন তেল আসে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইউক্রেন থেকে। সানফ্লাওয়ার অয়েলের জন্য ভরসা করে থাকতে হয় রাশিয়া এবং ইউক্রেনের ওপর। বছরে ২৫ লক্ষ টন এই দুই দেশ থেকে আনা হয়। আর এই দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির জেরে আমদানী ব্যাহত। ফলে জোগান কমতে থাকায় বাড়ছে দাম।
আরও পড়ুন: আটকে থাকা ছাত্র ফেরানো নিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে তিরস্কার রোমানিয়ার মেয়রের
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রতি বছর আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন সানফ্লাওয়ার অয়েলের চাহিদা রয়েছে৷ যার মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার মেট্রিক টন দেশে উৎপাদিত হয়৷ বাকিটা আমদানি করতে হয়৷ ভারতে মোট যে পরিমাণ তেল আমদানি করতে হয়, তার ১৪ শতাংশই সানফ্লাওয়ার অয়েল৷সানফ্লাওয়ার অয়েলের জন্য অন্য দেশের উপরে নির্ভরশীলতার জন্যই গত তিন বছরে হু হু করে ভারতের বাজারে এই তেলের দাম বেড়েছে৷ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যেখানে ভারতে এক লিটার সানফ্লাওয়ার অয়েলের দাম ৯৮ টাকা ছিল, সেখানে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তা ১৬১ টাকায় পৌঁছেছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে তেলের অগ্নিমূল্যের মূল কারণ ইউক্রেনের সঙ্কট৷ এই পরিস্থিতি কেটে গেলেই দাম কিছুটা কমবে বলে আশাবাদী তারা৷ পাশাপাশি, তেলের সঙ্গে এথানল মেশানোর যে প্রস্তাবের উপরে কেন্দ্রীয় সরকার জোর দিচ্ছে, তা কার্যকরী হলেও ভোজ্য তেলের দাম কিছুটা কমার কথা৷
বর্তমানে কলকাতার বাজারে লিটার প্রতি সরষের তেল বিকোচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। সাদা তেলের দাম কিছুদিন আগেও যেখানে ১৩০-১৫০ টাকা ছিল, তা একলাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৫-১৮০ টাকায়।