গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি তো বটেই, এনডিএ জোটসঙ্গীরাও উত্তরপ্রদেশে এক জনও মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করায়নি। কিন্তু এ যাত্রায় পরিস্থিতি ভিন্ন। ক্ষমতা ধরে রাখতে রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। এই আবহে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায় সুয়ার আসন থেকে শরিক আপনা দলের (সোনেলাল) মুসলিম প্রার্থী হায়দার আলি খানকে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত মেনে নিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। মুসলিম অধ্যুষিত ওই আসনে হায়দারের মূল প্রতিপক্ষ হতে চলেছেন স্থানীয় সাংসদ তথা সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানের ছেলে আবদুল্লা আজম।
২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে (UP Assembly Election 2022) বিজেপির (BJP) সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে আপনা দল (Apna Dal)। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ৭ দফা উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন। এবার ভোটে আপনা দল (এস) ও নিশাদ পার্টির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে বিজেপি। সেখানেই হায়দার আলিকে (Haider Ali Khan) বিধানসভা ভোটে টিকিট দেওয়া রাজনৈতিক দিক থেকে যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ। কারণ, ২০১৪-র পর এই প্রথম উত্তরপ্রদেশ ভোটে কোনও সংখ্যালঘু মুখকে (Muslim Candidate) প্রার্থী করল বিজেপি জোটসঙ্গী কোনও দল।
আরও পড়ুন: Priyanka Maurya: কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে ‘লড় সকতি হু’ প্রচারের মুখ প্রিয়াঙ্কা
রামপুরের অভিজাত পরিবারের ছেলে হায়দার আলি। ঠাকুরদা এবং বাবা – দু’জনই কংগ্রেসের (Congress) হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে জিতে একাধিকবার জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। হায়দারের বাবা এবারের ভোটেও কংগ্রেসের প্রার্থী। প্রাথমিকভাবে সুয়ার কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু শেষমেশ তিনি আপনা দলের নেত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেলের সঙ্গে দিল্লিতে গিয়ে তাঁর দলে যোগ দেন। সঙ্গে সঙ্গেই সুয়ার কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে দেন অনুপ্রিয়া। অনেকেই বলছেন, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপির জোটসঙ্গী হওয়ার হাতেগরম পুরস্কার জুটল হায়দারের।
পাঁচ বছর আগে ছোট ছোট আঞ্চলিক দল, তফশিলি জাতি ও দলিতদের বৃহত্তর হিন্দুত্বের ছাতার তলায় এনে মেরুকরণের তাস খেলেছিলেন অমিত শাহেরা। যে কারণে গত বার উত্তরপ্রদেশের ৪০৩টি আসনের একটিতেও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি বিজেপি ও তার জোট শরিকেরা। এ বারের পরিস্থিতি ভিন্ন। হিন্দুত্বের পরিবর্তে ফের জাতপাতের অঙ্কেই ভোটে বাজিমাৎ করতে চাইছে সব দল।
সেই কারণে শরিক অনুপ্রিয়া পটেলের নেতৃত্বাধীন আপনা দলের সুয়ার আসন থেকে হায়দার আলি খানকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিমরাজি হয়েও মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে বিজেপি শিবিরের মতে, শরিক দলের টিকিট দেওয়া নিয়ে হস্তক্ষেপ করা না হলেও, দল এখন পর্যন্ত কোনও সংখ্যালঘু প্রার্থীকে বিজেপির টিকিট দিতে রাজি নয়। যদিও দলের সংখ্যালঘু শাখা এ যাত্রায় অন্তত কুড়িটি আসনে সংখ্যালঘুদের প্রার্থী করার জন্য দাবি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের কোপে গান্ধীর প্রিয় খৃষ্ঠীয় স্তোত্র ‘Abide With Me’, বাদ বিটিং রিট্রিটের অনুষ্ঠান থেকে