দু’দিনের জি২০ সম্মেলন। তার জন্য দিল্লির সৌন্দর্যায়নে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা। কিন্তু সেই সৌন্দর্যায়নের নামে দিল্লির হাজার হাজার গরিব মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে বলে বিরোধী শিবির অভিযোগ তুলেছে।সেটা নিয়েই এবার কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)।
রাহুলের বক্তব্য, ভারতের ‘গরিবি’কে, ভারতের আসল বাস্তবকে আড়াল করার চেষ্টা করছে সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস (Congress) নেতা লিখছেন,”ভারতের সত্যিকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। ভারত সরকার গরিব ভারতবাসী এবং ভারতের পশুদের আড়াল করছে। আমাদের অতিথিদের সামনে এই সত্যিকে আড়াল করার কোনও প্রয়োজন ছিল না।”
শুক্রবারই জি২০ সম্মেলনের জন্য রাষ্ট্রনেতারা দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁদের অভ্যর্থনা চলছে। গোটা দিল্লি লেজ়ার আলো থেকে জলের ফোয়ারা, নানা রকম মূর্তি থেকে ফুলের টবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। উল্টো দিকে অতিথি রাষ্ট্রনেতাদের চোখ থেকে আড়াল করতে জুগ্গি-ঝুপড়ি বা বস্তির মলিন চেহারা সবুজ চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কোথাও ঝুপড়ি, বস্তি ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এমনকি ফুটপাথবাসীদের জন্য শীত ও বর্ষায় মাথা গোঁজার যে সব ‘রেন বসেরা’ তৈরি করা হয়েছিল, তা-ও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Bharat: বিরোধী জোটের India নামের জের, সরকারি ভাবে নামই বদলে গেল দেশের?
আজ কংগ্রেস তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে বলেছে, “রাজার গরিব মানুষ পছন্দ নয়। তাঁর বড়লোকি কাজ-কারবার, দামি কাপড়, দামি জুতো, বিলাসবহুল গাড়ির শখ। বড়লোক বন্ধুদের সঙ্গই তাঁর একমাত্র পছন্দ।” জি২০ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে সোনা-রুপোর থালাবাসনে খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত হচ্ছে। কংগ্রেস এ নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে একে ‘রাজাবাদশাদের শখ’ বলে কটাক্ষ করেছে।
সরকারি হিসেবে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে চার মাসে দিল্লি জুড়ে ৪৫টি উচ্ছেদ অভিযান চলেছে। সংসদে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছিল, এই সব উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ২৩০ একর সরকারি জমি খালি করা হয়েছে। গরিব মানুষের প্রশ্ন, তাঁরা কোথায় যাবেন? সরকারের ঝুপড়ি-বস্তি পছন্দ না হলে কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে পারত। ঘর ভাঙার কী দরকার ছিল? দিল্লির বস্তি সুরক্ষা মঞ্চের কর্মীদের অভিযোগ, ঝুপড়িবাসী হলেও সকলেরই ভোটার কার্ড, আধার কার্ড রয়েছে। কিন্তু তাঁদের বেআইনি জবরদখলকারী বলে তাড়ানো হচ্ছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দিল্লির দু’কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৪৭ হাজার মানুষ গৃহহীন। বাস্তবে সংখ্যাটা দেড় লক্ষের কাছাকাছি। তাঁদের জন্য অস্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁইও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Chandrababu Naidu: দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার চন্দ্রবাবু নাইডু, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ দল