‘১২টায় অফিস আসি ২টোয় টিফিন’, প্রায় ২৬ বছর আগে সরকারি দপ্তরের জীবন্ত ছবিটা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা। তবে এত দিনেও সরকারি কর্মীদের গয়ংগচ্ছ মানসিকতায় খুব একটা বদল আসেনি। এবার সরকারি অফিসের চেনা ছবিটা আপাদমস্তক বদলে ফেলতে কড়া নিয়ম আনল কেন্দ্রীয় সরকার। নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের ১ মিনিট দেরিতে অফিস ঢুকলে সরকারি কর্মীদের অর্ধেক দিনের বেতন কেটে নেওয়া হবে।
‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-র একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রের কর্মী এবং প্রশিক্ষণ বিভাগ এই নিয়ম চালু করেছে। সরকারি বিভিন্ন দফতরে কর্মরত সিনিয়র আধিকারিকদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কারও জন্য বিশেষ কোনও ছাড়ের বন্দোবস্ত নেই। নির্ধারিত সময় মেনে ঘড়ি ধরেই সব কর্মচারীকে অফিসে ঢুকতে হবে। রিপোর্ট বলছে, প্রতি দিন সকাল ৯টার মধ্যে সরকারি কর্মচারী এবং আধিকারিকদের সংশ্লিষ্ট দফতরে ঢুকতে বলা হয়েছে। ১৫ মিনিট দেওয়া হয়েছে ‘গ্রেস টাইম’ হিসাবে। অর্থাৎ, দফতরে প্রবেশের সরকারি সময় সকাল ৯টা। সব চেয়ে দেরি হলে ৯টা ১৫ মিনিটের মধ্যে তাঁরা দফতরে ঢুকতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি দেরি করা যাবে না।
যদি এক মিনিটও দেরি হয় সেক্ষেত্রে সরকারি কর্মীদের অর্ধেক দিনের বেতন কেটে নেওয়া হবে। অথবা বরাদ্দ ক্যাজুয়াল লিভের মধ্যে অর্ধদিবস ছুটি কেটে নেওয়া হবে। যে কোনও সরকারি কর্মচারীর সারা বছরে নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু দিনের ছুটি বরাদ্দ থাকে। কোনও প্রয়োজনে সেখান থেকে ছুটি নিতে পারেন তিনি। এই ধরনের ছুটিকে বলে ‘ক্যাজ়ুয়াল লিভ’। কোনও কর্মী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দফতরে না পৌঁছলে সেই বরাদ্দ ছুটির মধ্যে থেকে অর্ধদিবস কাটা যাবে তাঁর। অর্থাৎ, দু’দিন দেরি হলেই হাতছাড়া হবে একটি আস্ত ছুটির দিন।
এই নিয়মের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য সরকারি অফিসে কর্মীদের নিয়মানুবর্তিতা। শুধু কর্মী নন সকল আধিকারিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে এই নিয়ম। কর্মীদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপস্থিতি নথিভুক্ত করাতে হবে নির্দিষ্ট দফতরে। অর্থাৎ, নিজ নিজ পরিচয়পত্র দফতরে ঢোকার সময়ে যন্ত্রের মাধ্যমে ‘পাঞ্চ’ করাতে হবে। তাতেই উপস্থিতি নথিভুক্ত হবে। এ ছাড়াও কোন দফতরে কোন কর্মচারী কখন আসছেন, কখন যাচ্ছেন, সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের তার দিকে নজর রাখতেও বলা হয়েছে।