লোকসভায় বিশেষ অধিবেশন চলাকালীন বহুজন সমাজ পার্টির সাংসদ দানিশ আলিকে উদ্দেশ্য করে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক শব্দ ব্যবহার করলেন ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ রমেশ বিধুরি। সংসদের কর্মপদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী সেই অপশব্দসমূহ সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারও করা হয়েছে।
সংসদে চন্দ্রযান অভিযানের সাফল্য নিয়ে আলোচনা চলার সময় বিএসপি সাংসদ দানিশ আলির উদ্দেশে অত্যন্ত ‘আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার’ ব্যবহার করেন রমেশ বিধুরি। এক বার নয়, একাধিক বার তাঁর মুখে সেই অশালীন কথা শোনা যায় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর দানিশ লোকসভার অধ্যক্ষকে চিঠিতে লেখেন, ‘আপনার তত্ত্বাবধানে নতুন সংসদ ভবনের ভিতর এই ধরনের ঘটনা আমাকে এক জন সাংসদ হিসেবে এবং এই দেশের এক জন সংখ্যালঘু সদস্য হিসেবে অত্যন্ত দুঃখ দিয়েছে।’
বিরোধীরা সম্মিলিত ভাবে এর প্রতিবাদ জানালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দুঃখপ্রকাশ করেন। বলেন, ‘ওই সদস্যের মন্তব্যে যদি বিরোধী শিবির দুঃখ পেয়ে থাকেন, তা হলে আমি মার্জনা চাইছি।’ পাল্টা কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘ভয়ঙ্কর লজ্জার বিষয়। রাজনাথ সিংহের এই ক্ষমা চাওয়া মোটেও আন্তরিক নয়, গ্রহণযোগ্য তো নয়ই। এই ধরনের আচরণ সংসদের অপমান।’ তাঁর বক্তব্য, এক্ষেত্রে ‘সাসপেনশন’-ই একমাত্র পথ কারণ সাংসদ বিধুরির মন্তব্য প্রত্য়েক ভারতীয়ের কাছে লজ্জার। সঙ্গে কংগ্রেস মনে করিয়েছে, গত অধিবেশনে মন্ত্রীদের অসম্মান করার অভিযোগে লোকসভায় তাদের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্পিকার। তা হলে এবার কেন একই পথে হাঁটা হল না?
আরও পড়ুন: UP Student Death: ওড়না ধরে হ্যাঁচকা টান ‘রোমিও’দের, পড়ে যেতেই বাইকের ধাক্কায় মৃত্যু ছাত্রীর
ঘটনাটির ভিডিও পোস্ট করে আম আদমি পার্টিরও প্রশ্ন, ‘বিজেপির দিল্লি সাংসদ এক জন মুসলিম সাংসদের উদ্দেশে স্পিকারের সামনেই এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করছেন, এটাই কি বিজেপির সংস্কৃতি?’ গোটা ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন আরজেডি এমপি মনোজ ঝা। নিন্দা করে বিবৃতি দেয় সিপিএমও। ন্যাশনাল কনফারেন্স লিডার ওমর আবদুল্লা আবার বলেছেন, ‘…নতুন পার্লামেন্ট, পুরনো মনোভাব।’
বসপা সাংসদকে ‘উগ্রবাদী’ ‘আতঙ্কবাদী’র মতো হিংসাত্মক শব্দ বলার পরেও বিজেপির তরফে বা সংসদের পক্ষ থেকে ওই বিজেপি সাংসদকে কোনও শাস্তি না দেওয়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় তোলে নেটিজেনরাও। এরপরেই বিধুরির ওই মন্তব্য নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।একইসঙ্গে তাঁকে শোকজ করল BJP। শুক্রবার তাঁর নামে শোকজ নোটিশ ইস্যু করেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। বিরোধীদের চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল গেরুয়া শিবির, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: Vande Bharat Express: রবিবার শুরু হবে প্রথম গেরুয়া বন্দে ভারত! কোন রুটে চলবে এই ট্রেন?