উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের এক স্কুলের ক্লাস ২-এর পড়ুয়াকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় স্কুলের ডিরেক্টর সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, স্কুলের নাম, খ্যাতি বাড়াতে ওই ছাত্রের ‘বলিদান’ দিয়েছেন শিক্ষকরা! ঘটনার নেপথ্যে ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালা জাদুর কুসংস্কার রয়েছে বলে ধারণা।
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, হাথরাসের রাসগাও এলাকায় ডি এল পাবলিক স্কুলের ডিরেক্টর, তাঁর বাবা এবং তিন শিক্ষক ওই স্কুলের উন্নতিকল্পে নাকি এই নরবলির পরিকল্পনা করেন। আসলে ওই বেসরকারি স্কুলটি বেশ কিছুদিন ধরে লোকসানে চলছিল। স্কুলের ডিরেক্টরের বাবা ‘কালোজাদু’র চর্চা করে। সে-ই মূলত নরবলির পরিকল্পনা করে। তার বিশ্বাস ছিল, একটি শিশুকে ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গ করলে স্কুলের নাম-যশ দুইই ফিরবে।
রাজ্যের ডিএল পাবলিক স্কুলের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগে আরও এক ছাত্রের ‘বলিদান’ দিতে চেয়েছিলেন এই শিক্ষকরাই। কিন্তু সেবার তাঁরা সফল হননি। তবে এবার যে ঘটনা ঘটেছে তা আরও ভয়ঙ্কর। স্কুলের হস্টেলের মধ্যেই ওই ছাত্রকে খুন করা হয়েছে। যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন স্কুলের ডিরেক্টর দীনেশ বাঘেল এবং তাঁর বাবা। পাশাপাশি তিনজন শিক্ষক লক্ষণ সিং, ভীরপাল সিং এবং রামপ্রকাশ সোলাঙ্কি।
পুলিশ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে একাধিকবার স্কুলের হস্টেল থেকে শিশুকে তুলে এনে বলি দেওয়ার চেষ্টা হয়। প্রথমবার বলি দেওয়ার চেষ্টা হয় ৬ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সেবার যে শিশুটিকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সে সতর্ক হয়ে হস্টেল রুমের অ্যালার্ম বাজিয়ে দেয়। পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। ২২ সেপ্টেম্বর ফের চেষ্টা করা হয় খুনের।
২২ সেপ্টেম্বর ফের চেষ্টা করা হয় খুনের। পরদিন সকালে নিজের বিছানায় নিথর দেহ পাওয়া যায় শিশুটির। মৃত শিশুর বাবা জানিয়েছেন, তাঁকে হস্টেল থেকে ফোন করে বলা হয়, তাঁদের সন্তান গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে চলে যান শিশুটির বাবা। জানা যায়, শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শেষে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে শিশুটির বাবা দেখেন অভিযুক্তদের গাড়িতে তাঁদের সন্তানের দেহ পড়ে আছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ স্কুল চত্বর থেকে কালোজাদু এবং বলির সামগ্রী পায়। জানা যায়, স্কুলের ডিরেক্টরের বাবা তন্ত্রবিদ্যা এবং কালোজাদুর চর্চা করেন। তারপরই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।