যেই ভোলে বাবার পায়ের ধুলো নিতে গিয়ে হাথরাসে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৩০ জনের সেই ভোলে বাবার বিরুদ্ধে রয়েছে যৌন নির্য়াতনের অভিযোগ। আগরা, এটওয়া, রাজস্থান সহ একাধিক জায়গায় অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জেলও খেটেছেন। কিন্তু তারপরও বিনা বাধায় নিজেকে ধর্মগুরু বলে দাবি করে গিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোলে বাবার বিরুদ্ধে অতীতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে আগরা, এটা, কাসগঞ্জ, ফারুখাবাদ এবং রাজস্থানেও একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে এর আগে। এত কিছুর পরেও বাবার জনপ্রিয়তায় ভাটা পরেনি।
জানা গিয়েছে, স্বঘোষিত এই ধর্মগুরু ভোলে বাবার জন্ম উত্তরপ্রদেশের এটা জেলার পাতিয়ালি পঞ্চায়েতের বাহাদুর নাগরি গ্রামের এক কৃষক পরিবারে। তাঁর আসল নাম সুরজপাল সিং। পড়াশোনা শেষ করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশে যোগ দেন সুরজ। প্রায় ১৮ বছর উত্তরপ্রদেশে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এর হেড কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। ভোলে বাবার অনুগামীদের দাবি, ধর্মীয় বাণী প্রচারের জন্য ১৯৯৯ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। চাকরি ছেড়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে নারায়ণ সাকার হরি রাখেন সুরজ। সুরজপাল হয়ে ওঠেন ভোলে বাবা। এর পরে পরেই শুরু সৎসঙ্গের।
তবে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পুলিশে চাকরি করার সময় ১৯৯৭ সালে সুরজের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনার পরেই চাকরি খোয়াতে হয় ভোলে বাবাকে। জেলেও যেতে হয়। জেল থেকে মুক্তির পরেই নাকি নিজেকে ‘সাকার বিশ্ব হরি বাবা’ হিসাবে পরিচয় দিতে শুরু করেন তিনি। পৈতৃক বাড়িতেই আশ্রম খোলেন। হয়ে ওঠেন ভোলে বাবা। দিনে দিনে ভক্তসংখ্যাও বাড়তে থাকে। এখন হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, দিল্লি-সহ গোটা ভারতে অসংখ্য ভক্ত ছড়িয়ে রয়েছে স্বঘোষিত এই ধর্মগুরুর।
এ ছাড়াও করোনাকালে সৎসঙ্গের আয়োজন করে আইনি জটিলতায় নাম জড়ায় ভোলে বাবার। অতিমারির সময় বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদে একটি সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলেন স্বঘোষিত গুরু। জেলা প্রশাসন শুধুমাত্র ৫০ জনকে সেই সৎসঙ্গে যোগদানের অনুমতি দিলেও জড়ো হয়েছিলেন নাকি ৫০ হাজার মানুষ। এই বিশাল জনসমাগমের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের হয়।