উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে (Hathras) সর্বনাশা সৎসঙ্গে যোগ দিয়ে পদপিষ্ট হয়ে অসংখ্য মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে গোটা দেশে। শেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২১-এ পৌঁছেছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন শতাধিক মহিলা ও ৭টি শিশু। আহত ২৮।
হাসপাতালগুলির বাইরে শুধুই কান্নার রোল। স্বজন হারানো কান্না। কেউ কেউ আবার হাসপাতালের চারপাশ ছুটে বেড়াচ্ছেন পরিজনের খোঁজে। আদৌ বেঁচে আছেন কি না, জানেন না তাঁরা। পুলিশ, হাসপাতাল কর্মীদের জিজ্ঞাসা করেও লাভ নেই। তাঁদের কাছেও কোনও উত্তর নেই।
মঙ্গলবার হাথরসে সৎসঙ্গের ডাক দিয়েছিলেন নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা। তার শেষেই হুড়োহুড়ি পড়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মারা গিয়েছেন অন্তত ১২১ জন পুণ্যার্থী। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। কী ভাবে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল, তা অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশ।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ট্রাক বা ম্যাটাডর করে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। সেখানেই ঠাঁই হচ্ছে আহতদেরও। চারপাশে শুধু রক্ত-কান্না-চিৎকার। সবাই একে অপরকে শুধু প্রশ্নই করছেন, কিন্তু উত্তর পাচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— সবাই হাথরসের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। ক্ষতিপুরণও ঘোষণা করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, সৎসঙ্গের আয়োজকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তদন্তের জন্য পুলিশের বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বুধবার সকালেই সেই দল পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে।
ঘটনাস্থলে থাকা এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পর বাইরে বার হওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। বাইরে যাওয়ার পথে একটি বড় ড্রেন ছিল। তার উপর কাঠের পাটাতন দেওয়া হয়েছিল মাত্র। ভিড়ে চাপে সেই পাটাতন ভেঙে যায়। অনেকেই ড্রেনের মধ্যে পড়ে যান।’’ কেউ কেউ এই দুর্ঘটনার জন্য আয়োজকদের কাঠগড়ায় তুলছেন, কেউ আবার পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘এই দুর্ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। পুলিশের গাফিলতির কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানত এই সৎসঙ্গে এত ভিড় হবে। তার পরও ঠিক মতো পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি। আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশকর্মীদের বরখাস্ত করুন।’’