চারিদিকে শোয়ানো রয়েছে মৃতদেহ। ট্রাকে ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একের পর এক লাশ। নিথর দেহগুলির পাশে বসে রয়েছেন পরিজনরা। আচমকাই প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে গিয়েছেন সকলে। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই উত্তরপ্রদেশের হাথরাস জুড়ে শুধুই শোক আর হাহাকার। আর চোখের সামনে সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক পুলিশ কর্মীর।
হাথরসে পদপিষ্টের ঘটনার পরই এটা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে মোতায়েন করা হয়েছিল দুই পুলিশকর্মীকে। তাঁদের মধ্যে এক জন কনস্টেবল রবি কুমার। দুপুর ২টোর পর থেকেই লাশের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল হাসপাতালে মর্গে। হাসপাতালে যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, তার জন্য সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। তাঁদের মধ্যে রবি এবং তাঁর এক সহকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছিল মর্গের সামনে।
চোখের সামনে এত মৃত্যু, রক্ত, আর্তনাদ দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি রবি। তাঁর সহকর্মী জানান, হাসপাতালের মর্গে যখন লাশের সংখ্যা বাড়ছিল, রবি সেই সব লাশ দেখে খুবই বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। মর্গের সামনেই অস্থির ভাবে পায়চারি করছিলেন। তখনও বোঝা যায়নি তাঁর মধ্যে কী চলছে। আচমকাই রবি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অসুস্থ হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয় রবির। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই পুলিশকর্মীর।
যাদবের সহকারী আরেক কনস্টেবল ললিত চৌধুরি বলেন, “উনি এত মানুষের মৃত্যু দেখে আঁতকে উঠেছিলেন। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন মহিলা। আমরা যখন মৃতদেহ উদ্ধার করছিলাম, আচমকাই উনি মাটিতে পড়ে যান। আমরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু ততক্ষণে উনি মারা গিয়েছেন।” ললিতের কথায়, ডাক্তার জানিয়েছেন যে যাদবের সম্ভবত এত সংখ্যক মৃতদেহ দেখে ‘অ্যাকিউট ট্রমা’ হয়ে গিয়েছিল।
মঙ্গলবার হাথরাসে সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলেন নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা। সেই অনুষ্ঠানের শেষেই হুড়োহুড়ি পড়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।ইতিমধ্যে আগরার অতিরিক্ত ডিজিপির নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হাথরাসে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। নামানো হয়েছে ডগ স্কোয়াড। ফরেনসিক পরীক্ষাও চলছে। একযোগে কাজ করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, এনডিআরএফ।