দাবদাহে ভয়ংকর পরিস্থিতি বিহারে। চলছে তাপপ্রবাহ (Heatwave)। গত ৪৮ ঘণ্টায় বিহারে গরমে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১০ জন ভোটকর্মী। শুক্রবার এই পরিসংখ্যান দিয়েছে প্রশাসন। রাজ্যের আপৎকালীন বিভাগ জানিয়েছে, গরমে মৃত ১৮ জনের মধ্যে ১১ জনই রোহতাস জেলার। ছ’জন ভোজপুর জেলার, এক জন বক্সারের।
বিহারের প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোজপুরে পাঁচ জন ভোটকর্মীর মৃত্যু হয়েছে গরমে। রোহতাসে গরমে মৃত ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন তিন জন ভোটকর্মী। তাঁদের মধ্যে দু’জন ভোজপুর এবং এক জন বক্সারে ভোটের কাজে গিয়েছিলেন। রোহতাস জেলা দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। সেগুলি হল সাসারাম এবং কারাকাট। ভোজপুর জেলা পড়ে আরাহ্ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। বক্সার একটি লোকসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রগুলিতে ভোট রয়েছে শনিবার, সপ্তম তথা শেষ দফায়। ওই দিন বিহারের মোট আটটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। কায়মুর এবং অওরঙ্গাবাদে এক জন করে ভোটকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত ভোটকর্মীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার।
গত কয়েক দিন ধরে বিহারের বহু জায়গায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তারই জেরে ঔরঙ্গাবাদে দুঘণ্টায় প্রাণ হারালেন ১৬ জন! বুধবার সেখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার তা সামান্য কমে দাঁড়ায় ৪৪ ডিগ্রিতে। এই শহরই এই মুহূর্তে বিহারের সবচেয়ে উষ্ণ অঞ্চল। রাজ্যের বাকি অঞ্চলেও তথৈবচ অবস্থা।বেগুসরাই, মুজফ্ফরপুর, শেখপুরা, পূর্ব চম্পারণে স্কুলের মধ্যেই শিক্ষকদের জ্ঞান হারানোর খবর প্রকাশ্যে এসেছে।
শেখপুরা জেলাতেই এক সরকারি স্কুলে অন্তত ১৬ জন ছাত্রীর অচেতন হয়ে পড়ার খবর মিলেছিল। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স না মেলায় টু হুইলার ও ই-রিকশায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই ভাবে বেগুসরাই ও জামুইতেও পড়ুয়াদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর মিলেছিল। তবুও স্কুল ছুটির সিদ্ধান্ত নেয়নি বিহার সরকার। আর এর পরই রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব নীতীশ সরকারকে একহাত নেন। লালুপুত্রকে বলতে শোনা যায়, ”বিহারে কোনও গণতন্ত্র নেই। নেই কোনও সরকারও। কেন মুখ্যমন্ত্রী এমন দুর্বল? তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে, চিকিৎসকরা বলছে বাচ্চারা যেন নিরাপদ স্থানে থাকে, এর পরও স্কুল খোলা রাখা হচ্ছে!” সমালোচনা তীব্র হতেই অবশ্য স্কুল বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তবে রাজ্যের সরকারি স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও শিক্ষকদের হাজিরা দিতে হবে।