বিজেপি তাচ্ছিল্য করে নাম রেখেছিল ‘বান্টি অউর বাবলি’। সেই বান্টি আর বাবলি দম্পতি হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren) ও তাঁর স্ত্রী কল্পনা সোরেন (Kalpana Soren) টানা দ্বিতীয়বার মহা গাঁটবন্ধনের ছায়ায় সরকার গড়তে চলেছেন। ঝাড়খণ্ডের রাজনীতির ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা এই দম্পতির ঘাম ঝরানো দৌড়ে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও পিছনে ঠেলে দিয়েছে (Jharkhand Assembly Election Results 2024)।
২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এই প্রশ্নের ঝটিতি জবাব দিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) প্রতিষ্ঠাতা শিবু সোরেনের পুত্র, ‘‘ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিহাস কাদের রয়েছে? আমাদের, আদিবাসীদের আর কংগ্রেসের। সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের সঙ্গে তো আমরাই রয়েছি।’’
পাঁচ বছর পর আর এক বিধানসভা ভোটের ফল বলে দিল, ভোটের অঙ্ক কষায় কোনও ভুল ছিল না। হেমন্ত সোরেনের ‘প্রত্যাবর্তন’ দেখল ঝাড়খণ্ড। ঘটনাচক্রে, হেমন্তকালেই। আড়াই দশকের পুরনো পূর্ব ভারতের আদিবাসীপ্রধান রাজ্যে এই প্রথম বার কোনও বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন।
হেমন্ত ও কল্পনা দুজনেই রাজ্যের আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ককে সহানুভূতি ভোটে (Jharkhand Assembly Election Results 2024) পরিবর্তন করতে পেরেছিলেন। সরকার বিরোধী হাওয়াকে আদিবাসী আবেগের উপর ভর দিয়ে পরিচালিত করতে সমর্থ হয়েছেন। ভোট বিশেষজ্ঞদের মতে, সোরেনের বিরুদ্ধে বিজেপির জমি কেলেঙ্কারি ইস্যু, অনুপ্রবেশ কিংবা লাভ জিহাদের প্রচার ধোপে টেকেনি।
গলায় হাঁসুলি, এক হাতে ব্রেসলেট, অন্য হাতে ঘড়ি। পরনে ঝাড়খণ্ডের আঞ্চলিক পড়িয়া শাড়ি। প্রচারে গেলে মঞ্চ থেকে নমস্কার, আদাব, প্রণাম এবং জোহার বলে সম্বোধন। সব মিলিয়ে রাজ্যের ঘরের মেয়ের একটি প্যাকেজ হলেন কল্পনা। যা দিয়ে স্বামীর মানরক্ষা থেকে আদিবাসী অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন দীর্ঘ ২৫০ দিন ধরে। আর সেই লড়াইয়েরই সুফল তুললেন বিজেপির মুনিয়া দেবীকে ১০ হাজারের কাছাকাছি ভোটে হারিয়ে।