রেওয়াজ নাকি রাজ, হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh) কোনটা বদলাবে? সকাল থেকে দীর্ঘ দড়ি টানাটানির পর শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যটি কংগ্রেসের হাতেই আসতে চলেছে। এখনও পর্যন্ত ফলাফল বলছে, পাহাড়ি রাজ্যটিতে ৩৯ আসনে জিততে চলেছে কংগ্রেস। বিজেপির দখলে যাচ্ছে ২৬টি আসন। আর নির্দল প্রার্থীরা জিতছেন ৩টি আসনে। (Himachal Pradesh Assembly Election)
১৯৭৭ সাল থেকে এই রাজ্য কখনও এক দলকে পর পর দু’বার ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দেয়নি। সেই রেওয়াজই বজায় রাখলেন হিমাচলের মানুষ। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির স্লোগান ছিল— ‘রাজ নয়, রেওয়াজ বদলো।’ সেই স্লোগানে ভর করেই বিজেপিকে সরিয়ে কংগ্রেসকে আবার সুযোগ দিল হিমাচল।
তবে সরকার গড়ার জায়গায় পৌঁছে গেলেও স্বস্তিতে নেই কংগ্রেস। তাদের আসনসংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার তুলনায় সামান্যই বেশি। আবার যে ৩ জন নির্দল জিতেছেন, তাঁরা যদি বিজেপিকে সমর্থক করেন, তাহলে বিজেপিও সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। আর সেটাই কংগ্রেসের আশঙ্কার মূল কারণ। হাত শিবিরের আশঙ্কা, সোজা পথে ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও সরকার গড়ার জন্য ঘোড়া কেনাবেচার মরিয়া চেষ্টা করতে পারে বিজেপি। অন্য রাজ্যের মতো হিমাচলে অপারেশন লোটাসের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ গুজরাটে (Gujarat) বিজেপি যতই বড় ব্যবধানে জিতুক দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার নিজের রাজ্যে হার, তাদের জন্য মোটেই সুখকর বিজ্ঞাপন নয়।
সেকারণেই আগেভাগে বিধায়কদের সতর্ক করা শুরু করেছে হাত শিবির। ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য সব জয়ী প্রার্থীর কাছে ফোন গিয়েছে হাই কম্যান্ডের তরফে। কংগ্রেসের তিন শীর্ষনেতা রাজীব শুক্লা, দীপেন্দ্র হুডা এবং ভুপেশ বাঘেলকে (Bhupesh Baghel) ইতিমধ্যেই হিমাচলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, দলের বিধায়কদের ভিনরাজ্যে পাঠিয়ে দিতে পারেন খাড়গেরা।
আরও পড়ুন: Bhagalpur: ভরা বাজারে কাটা হল স্তন! কাটা হল হাত-পা-কান, ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড বিহারে
হিমাচলে কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করতেই মুখ্যমন্ত্রীর পদের দাবিদার নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে তৎপরতা তুঙ্গে। কারণ ইতিমধ্যেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বীরভদ্র সিংহের স্ত্রী এই পদের দাবিদার হিসাবে নিজেকে তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, “এই রাজ্যের উন্নয়নে বীরভদ্র সিংহের অনেক অবদান আছে। তাই রাজ্যবাসীও চান এই পরিবারের কেউ সেই উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাক।”
প্রতিভার পাশাপাশি এ বারের নির্বাচনে আরও এর জনের নাম উঠে আসছে। তিনি হলেন সুখবিন্দর সিংহ সুখু। তিনি এ বার নাদৌন থেকে লড়েছেন। ২০১৩ সালে থেকে ২০১৯ পর্যন্ত হিমাচলের কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন সুখু। এ বারের নির্বাচনে কংগ্রেসের তরফে প্রচার কমিটির মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সুখবিন্দরকে। ঘটনাচক্রে, বীরভদ্রের পরিবারের সঙ্গে সুখুর সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয়। কিন্তু তার পরেও তাঁকে প্রচার কমিটির প্রধান দায়িত্ব দেয় কংগ্রেস হাইকমান্ড। দলের এক সূত্রের দাবি, নির্বাচনে সুখুকে টিকিট দেওয়া নিয়েও প্রবল আপত্তি জানিয়েছিলেন প্রতিভা।
তবে ‘ফাইনালের লড়াই’ প্রতিভা এবং সুখবিন্দরের মধ্যে হলেও পাহাড়ি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদের রয়েছেন আরও দাবিদার। সবাইকে টপকে হিমাচলের কুর্সিতে কে বসেন আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য।
আরও পড়ুন: Gujarat Assembly Election 2022: মোদী – শাহের উপস্থিতিতে সোমে শপথ ভূপেন্দ্রর, তলিয়ে গেল আপ-কংগ্রেস