অসমের মূল নিবাসী হতে গেলে মানতে হবে অসমীয়া সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, এমনটাই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma)। বাংলাদেশি বাংলাভাষী মুসলিমরা অসমে ‘মিঞা’ নামে পরিচিত। এঁদেরকে রাজ্যের মূল নিবাসী বলে মনে করেন না সেখানকার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে অসমে মিঞাদের মূল নিবাসী হওয়ার জন্য একাধিক শর্ত দিলেন অসমের (Assam) মুখ্যমন্ত্রী।
হিমন্ত জানান, কোনও পরিবারে যদি দুইয়ের বেশি সন্তান থাকে, তবে বাংলাদেশি মুসলিমেরা অসমের বাসিন্দা হতে পারবেন না। এ ছাড়াও, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ বন্ধ করার শর্তও দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘যদি এ রাজ্যের বাসিন্দা হতে হয় তবে নাবালিকার বিয়ে দেওয়া যাবে না।’’ পাশাপাশি হিমন্ত জানান, ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় পড়ানো যাবে না। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাদ্রাসার পরিবর্তে ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো ক্ষেত্রে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’’ মেয়েদেরও স্কুলে পাঠাতে হবে। হিন্দু আইনের মতো তাঁদেরও দিতে হবে পৈত্রিক সম্পত্তির উপর সমান অধিকার। যদি এই সব শর্ত পালন করে মুসলিমরা অসমের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গ্রহণ করেন, তবে সেই মুসলিমদের মূল নিবাসী হতে কোনও সমস্যা হবে না।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে অসম মন্ত্রিসভা রাজ্যের প্রায় ৪০ লক্ষ মুসলিমকে স্বদেশি অসমীয়া মুসলিম বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই মুসলিমদের মাতৃভাষা অসমীয়া। যদিও এই তালিকায় বাদ পড়েছেন বাংলাভাষী মুসলিমরা। অথচ অসমে মুসলিম জনসংখ্যার মাত্র ৩৭ শতাংশ অসমীয়াভাষী মুসলিম। বাকি ৬৩ শতাংশ বাংলাভাষী মুসলিম (মিঞা)। এছাড়াও মন্ত্রিসভার তরফে অসমীয়া ভাষাভাষী আরও পাঁচটি স্বতন্ত্র গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে অসমে মূল নিবাসীর তকমা না পাওয়া বাংলাভাষী মুসলিমদের উদ্বেগ চরম আকার নেয়। এই অবস্থায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলিমদের মূল নিবাসী হতে নয়া শর্ত চাপালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।