শুক্রবার পাক পার্লামেন্টে অনস্থা ভোটাভুটিতে তাঁর ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে। এই রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও ‘বেকারত্ব’র নিরিখে ভাল অবস্থায় রয়েছে ইমরানের পাকিস্তান। বেহাল অবস্থা নরেন্দ্র মোদীর ভারতের। রাজনৈতিক তরজা নয় বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট সে কথাই বলছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেকারত্বে শীর্ষে ভারত (India unemployment rate)। বেকারত্বের শতকরা হার ৮.০ শতাংশ। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশটির নাম মালদ্বীপ, বেকারত্ব ৬.৩ শতাংশ। বাংলাদেশ (৫.৪), ভুটান (৫.০), শ্রীলঙ্কা (৪.৯), নেপাল (৪.৭) এমনকী পাকিস্তানেও (৪.৩) বেকারত্বের হার ভারতের থেকে অনেকটাই কম। বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানেই সব থেকে কম বেকারত্ব। নরেন্দ্র মোদি সরকারের জন্য এই রিপোর্ট স্বস্তির নয়।
মোদী জমানায় শিক্ষিতদেরও চাকরি নেই! সংসদে পরিসংখ্যান পেশ করে এই কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই। এমনকী উচ্চশিক্ষিত হয়েও মিলছে না চাকরি। দেশের প্রায় ১৩ শতাংশ বেকার যুবক-যুবতী স্নাতকোত্তর এবং তারও বেশি ডিগ্রির অধিকারী। স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে, অথচ চাকরি পাননি সারা দেশে এমন বেকারের হার প্রায় ১৪ শতাংশ। বেকারের তালিকায় রয়েছেন ডিপ্লোমাধারীরাও। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, ডিএমকের সংসদ সদস্য নানাথিরাভিয়াম এস এবং জেডিইউ সাংসদ অলোককুমার সুমনের এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে সোমবার লোকসভায় এমনই উদ্বেগজনক তথ্য পেশ করেছেন শ্রমমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি।
শ্রমমন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরের সর্বশেষ বার্ষিক পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভের (পিএলএফএস) তথ্য অনুসারে উল্লিখিত পরিসংখ্যান সংসদে পেশ করা হয়েছে। সেই সার্ভে রিপোর্ট বলছে, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে সারা দেশে বেকারত্বের হার ৪.৮ শতাংশ। শিক্ষার মাপকাঠিতে গোটা দেশের বেকারদের হারকে মোট ন’টি ক্যাটিগরিতে ভাগ করেছে মোদী সরকার। অশিক্ষিত, শিক্ষিত ও প্রাথমিক পর্যন্ত, মধ্য, সেকেন্ডারি, হায়ার সেকেন্ডারি, ডিপ্লোমা/সার্টিফিকেট কোর্স, স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও তদূর্ধ্ব এবং সেকেন্ডারি ও তদূর্ধ্ব। প্রতিটি ক্যাটিগরির জন্য রাজ্যওয়াড়ি পরিসংখ্যানও এদিন লোকসভায় পেশ করেছে শ্রমমন্ত্রক। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং তার উপরের ডিগ্রি রয়েছে, সারা দেশে এমন বেকারের হার ১২.৯ শতাংশ। গ্র্যাজুয়েটের ক্ষেত্রে এই হার ১৭.২ শতাংশ। ডিপ্লোমা/সার্টিফিকেট কোর্স করা রয়েছে, সারা দেশে এমন বেকারের হার ১৪.২ শতাংশ। শিক্ষাগত যোগ্যতা হায়ার সেকেন্ডারি পর্যন্ত, এমন বেকারের হারও কম নয়—৭.৯ শতাংশ। অন্তত এমনই ছবি স্পষ্ট হচ্ছে শ্রমমন্ত্রকের পেশ করা পরিসংখ্যানে।
এক্ষেত্রে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির ঠিক কী পরিস্থিতি? উল্লিখিত কেন্দ্রীয় সরকারি পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, ডিপ্লোমা কিংবা সার্টিফিকেট কোর্স করা রয়েছে, উত্তরপ্রদেশে এমন বেকারের হার জাতীয় গড়ের থেকেও অনেক বেশি—২১.২ শতাংশ। ত্রিপুরাতেও সংশ্লিষ্ট ক্যাটিগরিতে এই হার জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি—১৬.৩ শতাংশ। স্নাতকোত্তর এবং তদূর্ধ্ব ডিগ্রি রয়েছে, গুজরাতে এমন উচ্চশিক্ষিত বেকারের হার ৮.৮ শতাংশ। স্নাতক ডিগ্রি থাকা শিক্ষিত বেকারের হার অসমে ২০.১ শতাংশ। যা এই ক্যাটিগরির জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। উত্তরাখণ্ডে ২১.৯ শতাংশ। আর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানায় ডিপ্লোমাধারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৩.১ শতাংশ। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ও তদূর্ধ্ব ক্যাটিগরিতে পশ্চিমবঙ্গের হার জাতীয় গড়ের তুলনায় কম।