১৫ মার্চের মধ্যেই ভারতের সমস্ত সামরিক কর্মীদের প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিলেন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু। শনিবার কোনও দেশের নাম না করেই হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছিলেন, কাউকে ধমকানোর ছাড়পত্র দেয়নি তার সরকার। তার পরের দিনই ভারতীয় সেনাকে দ্রুত মলদ্বীপ ছাড়তে বলা হল। তবে এ বার শুধু কূটনৈতিক স্তরে আর্জি জানানোই নয়, রীতিমতো দু’মাসের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, রবিবার মালদ্বীপের বিদেশমন্ত্রকের হেডকোয়ার্টার্সেই বৈঠকে বসেন দুই দেশের আধিকারিকরা। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা (Indian Army) সরানো নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু হয়। এই কমিটির প্রথম বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মাহাওয়ার। মালদ্বীপের এক মন্ত্রী ইব্রাহিম খলিল জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুইজ্জুর বৈঠকে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই কমিটির সদস্যরাই হাজির ছিলেন। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানো ছাড়াও আরও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেই খবর।
লাক্ষাদ্বীপ-মালদ্বীপ বিতর্ক সাম্প্রতিক হলেও, মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়টি নতুন নয়। বস্তুত, ‘ইন্ডিয়া আউট’ এই নীতি সামনে রেখেই ক্ষমতায় এসেছেন মুইজ্জু। নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি ভারতীয় সৈন্যদের মলদ্বীপ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “মালদ্বীপের মাটিতে কোনও বিদেশি সেনা না থাকাটা আমাদের দেশকে নিশ্চিত করতে হবে”।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে মালদ্বীপে ৮৮ জন ভারতীয় সামরিক কর্মী রয়েছেন। সাধারণত, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর, তাঁর প্রথম বিদেশ সফরে ভারত ভ্রমণ করেন। কিন্তু, সম্পূর্ণ উল্টো পথে হেঁটেছেন মুইজ্জু। প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি চিনে গিয়েছিলেন। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, চিনের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।
চিন সফরের সময়, মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু যেমন বেজিংয়ের সঙ্গে হাত মেলানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রেক্ষিতে ভারতকেও পরোক্ষে আক্রমণ করেন। কোনও বিশেষ দেশের নাম না করেই মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, “আমরা ছোট দেশ হতে পারি, কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি আমাদের ধমক দেওয়ার লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছেন। আমরা কারও বাড়ির উঠোনে অবস্থিত নই। আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। তাই, মলদ্বীপের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে না গলানোর অধিকার কোনও দেশের নেই।”