রেন্দ্র মোদী সরকারের মেয়াদে এ বার ভারতীয় মুদ্রার চরম অবমুল্যায়ন ঘটল। ডলারর বিনিময়ে টাকার দাম সোমবার সকালে পৌঁছে গেল ৭৭.৪২ টাকায়। এত কম কোনওকালে হয়নি।
মুদ্রার (Rupee) অবমূল্যায়নকে এক সময়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বয়সের সঙ্গে তুলনা করে টিপ্পনি কাটত বিজেপি। বলত বাজপেয়ী জমানায় ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার (Rupee) দাম ছিল ৪১ টাকা, যা রাহুল গান্ধীর এখনকার বয়সের সঙ্গে সমান। যে ভাবে ইউপিএ সরকার চলছে তাতে অচিরে তা মনমোহনের বয়স ছাপিয়ে যাবে।
বিজেপি যতই টিপ্পনি কাটুক, মনমোহন জমানায় সেই পরিস্থিতি হয়নি। কিন্তু রবিবার যা হল তাতে সাধারণ মানুষের চাপ যে বাড়তে চলেছে একথা বলাই যায়।
টাকার দর পড়ার স্বাভাবিক কিছু প্রতিক্রিয়া আছে। যে প্রতিক্রিয়া সমাজের সমস্ত স্তরের নাগরিকদের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। কী কী সেই প্রতিক্রিয়া? একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
- দেশে কারেন্সি বা টাকার দর পড়ার অব্যবহিত প্রতিক্রিয়াই হল মুদ্রাস্ফীতির বৃদ্ধি। চড় চড় করে বাড়তে পারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম। বিশেষত জ্বালানির অর্থাৎ পেট্রল-ডিজেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে পারে। পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়লে তা পরিবহন ব্যবসায় আঘাত হানবে। আর পরিবহন ব্যবসায় আঘাত এলে সার্বিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়বে।
- খুব স্বাভাবিকভাবেই দেশে টাকার দাম পড়লে এবং ডলারের দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই যাঁরা বাইরে পড়াশোনা করছেন– তাঁদেরকে অতিরিক্ত মূল্য দিতে হবে। এছাড়া যাঁরা বিদেশে চাকরির জন্য আছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডলার সেক্ষেত্রে বাড়িতে পাঠাতে হবে।
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: ধর্ষণের শিকার দলিত নাবালিকা, অপমানে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী
- ভারত বর্তমানে বিদেশ থেকে নানা শস্যসামগ্রী আমদানি করে থাকে। এবার টাকার দর কমলে এবং ডলারের দর বাড়লে, তাঁদের আমদানিকৃত সামগ্রীর জন্য বেশি টাকা দিতে হবে। যা ডলারের নিরিখে স্বাভাবিকভাবেই কম হবে। যে কারণে আমদানিকৃত সামগ্রীর দাম দেশের বাজারে বাড়বে।
- যে সংস্থাগুলো বৈদেশিক মুদ্রার মাধ্যমে পেমেন্ট দেশীয় টাকায় রুপান্তর করেক্স তাঁদের কমিশন বাড়বে। ফলত, দেশের IT কোম্পানি এবং ফার্মা কোম্পানিগুলোর রোজগার বাড়বে৷
আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বছর ভারতীয় বাজার থেকে বিদেশি লগ্নিকারীরা ইতিমধ্যে ১৭.৭ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছে। যাও একটা রেকর্ড। সেই সঙ্গে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট, পেট্রো পণ্য তথা কাঁচা তেলের দাম বাড়া, যুদ্ধ পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয় টাকার অবমূল্যায়নের বড় কারণ। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট বাড়িয়েও তা আটকাতে পারেনি।অনেকের মতে, এই অবমুল্যায়ন হয়তো এখানেই থামবে না। তা অচিরে পৌঁছে যেতে পারে কমবেশি ৮০ টাকায়।
আরও পড়ুন: ভারতে স্বপ্নভঙ্গ! দেশ থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেল এলন মাস্কের কোম্পানি Tesla