এবারেও জম্মু ও কাশ্মীরে হচ্ছে না বিধানসভা নির্বাচন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ এবং সিকিমে বিধানসভা নির্বাচন হবে। তবে এই তালিকায় নেই জম্মু ও কাশ্মীর। শেষবার ২০১৪ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল। এক দশক পেরিয়েও বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হওয়ায় ইতিমধ্যেই বিরোধীরা সমালোচনা করেছেন।
রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছিল। গত বছর ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রায় দেয়, কেন্দ্রীয় সরকারের ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক নয়। সঙ্গে এও ঘোষণা করা হয়েছিল, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাতে হবে। চলতি বছরে লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিধানসভা নির্বাচনের দাবি করেছিল বিরোধীরা। কিন্তু শেষমেশ তার ঘোষণা করা হল না।
এদিন নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা করেন, জম্মু ও কাশ্মীরে পাঁচ দফায় লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হবে। ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে। পাঁচ দফায় পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হবে। ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৪ জুন। ১৯ এপ্রিল উধমপুর, ২৬ এপ্রিল জম্মু, ৭ মে অন্ততনাগ, ১৩ মে শ্রীনগর, ২০ মে বারমুল্লা লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হবে।
যদিও রাজীব শনিবার বলেছেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীর দ্রুত বিধানসভা ভোট করাতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’ প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাসের দায়িত্বে থাকা ‘ডিলিমিটেশন কমিশন’-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করা হয়েছিল গত বছর। সাতটি আসনের মধ্যে ছ’টি বেড়েছে জম্মুতে (৩৭ থেকে ৪৩) এবং একটি কাশ্মীরে (৪৬ থেকে ৪৭)। কমিশন জানিয়েছে, ২০১১ সালের জনসংখ্যার ভিত্তিতেই আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদিও অভিযোগ উঠেছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হিন্দুপ্রধান জম্মুতে মুসলিম প্রধান কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় বেশি আসন বাড়ানো হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় জম্মু-কাশ্মীরে যে পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে, তার প্রত্যেকটিতে এখন থেকে ১৮টি করে বিধানসভা কেন্দ্র থাকবে। অন্য দিকে, পূর্বতম রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর ভেঙে তৈরি হওয়া আর এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে থাকবে একটি লোকসভা কেন্দ্র। অবিভক্ত জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ লাদাখে থাকা ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের অস্তিত্ব ইতিমধ্যেই বিলোপ হয়েছে। কিন্তু বাকি অংশে কবে ভোট হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল।