প্রায় ছয় বছর পর জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় প্রথম অধিবেশন বসে সোমবার। শুরুতেই ৩৭০ ধারার প্রসঙ্গে ওঠায় কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
২০১৯ সালে কাশ্মীর থেকে তুলে নেওয়া হয় ৩৭০ ধারা। প্রায় ছয় বছর পর ভোট হয়েছে সেখানে। সরকার গঠন করেছে ন্যাশনাল কনফারেন্স। মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ওমর আবদুল্লাহ।
সোমবার বিধানসভায় মেহবুবা মুফতির দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)-র বিধায়ক ওয়াহিদ পাররা অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ করেন। তার পরেই হইচই শুরু করে দেন বিজেপি বিধায়কেরা। এমনকি জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার সদ্য মনোনীত স্পিকার, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) বিধায়ক রহিম রাঠেদারও জানান, এই ধরনের প্রস্তাবকে তিনি অনুমোদন করছেন না।
অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ধ্বনিভোটে রাঠেদারকে স্পিকার হিসাবে নির্বাচিত করেন বিধায়কেরা। কাশ্মীরের চারার-ই-শরিফ বিধানসভা কেন্দ্রের সাত বারের বিধায়ক রাঠেদার। স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁকে শুভেচ্ছা জানান জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক সুনীল শর্মা। অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের প্রসঙ্গে বলতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী ওমর বলেন, “বাস্তবতা এটাই যে, ২০১৯ সালে ৫ অগস্ট নেওয়া সিদ্ধান্ত জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ সমর্থন করেনি। যদি তাঁরা সেটা করতেন, তবে আজকের এই ফলাফল অন্য রকম হত।”
অধিবেশনের শুরুতেই প্রথা মেনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা। তাঁর বক্তব্যেও উঠে আসে অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “আমার সরকার রাজ্যের তকমা ফেরাতে সব ধরনের চেষ্টা করবে।” প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই কাশ্মীরের নবনিযুক্ত মন্ত্রিসভা অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করে ফের রাজ্যের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের সপক্ষে প্রস্তাব পাশ করে। সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে রাজ্যপালের ভাষণে। সচরাচর রাজ্য সরকারের লিখিত ভাষণই পাঠ করে থাকেন রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সাংবিধানিক প্রধানেরা। সেই রীতি মেনেই উপরাজ্যপালের বক্তব্যে ওমর আবদুল্লা সরকারের মনোভাবের প্রতিফলন ধরা পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে
ওমর আবদুল্লাহ ক্ষমতায় আসার পরই ৩৭০ ধারার প্রসঙ্গ শিরোনামে উঠে আসে। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর জানান, বিজেপি জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা ফের চালু করবে, এমনটা ভেবে নেওয়া বোকামো। তবে, এই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হবে এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স বিষয়টিকে জাগিয়ে রাখবে।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে আমাদের অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হবে না। আমরা কোনওদিন বলিনি ৩৭০ ধারা নিয়ে আমরা চুপ করে যাব। এটা বলেছি, এই মুহূর্তে ৩৭০ ধারাকে প্রসঙ্গ বানাব না। আমি নির্বাচনের আগেও বলেছি, যারা জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষজনের থেকে ৩৭০ ধারা ছিনিয়ে নিয়েছে, তারাই এই বিশেষ মর্যাদা ফের ফিরিয়ে দেবে, এমন আশা করা মুর্খামি।’