সংসদের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তার সেই বক্তৃতার ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে সংসদের দুই কক্ষে। মঙ্গলবার লোকসভায় সেই বিতর্কে অংশ নিয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র খোঁচা দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এদিন তিনি বিজেপিকে ৪০০ পারের স্লোগান নিয়ে খোঁচার সুরে ‘চু কিতকিত’ মন্তব্য করেন। তাঁর এই মন্তব্যে হাসির রোল ওঠে ভরা লোকসভা কক্ষে। হেসে ফেলেন সায়নী ঘোষ, মহুয়া মৈত্র, সাজদা আহমেদরা। এমনকী ভিন রাজ্যের সাংসদ হেসে গড়ালেন।
কল্যাণের বক্তৃতার অংশবিশেষ সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করেছে মঙ্গলবার দুপুর থেকে। যেখানে কল্যাণকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘বলেছিল, এ বার ৪০০ পার! খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। খেলা তো অনেক রকম হয়। চু কিতকিতটাও একটা খেলা। চু কিতকিতে চু ধরা ছিল ৪০০তে । তার পর কিতকিতকিতকিতকিতকিতকিতকিতকিত…কত হল? ২৪০!’’ মোদীর উদ্দেশে কল্যাণ বলেন, “আপনি কোনও প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে পারেননি। আপনার ‘মন কি বাত’ হোক বা দিল কি বাত—কিছুই পূরণ হয়নি।মোদীজির গ্যারান্টি রয়েছে কিন্তু তাঁর গ্যারান্টিতে ওয়ারেন্টি নেই।”
TMC MP Kalyan Banerjee was the one who copied Jagdeep Dhankar when several opposition MPs were suspended.
Good news is that he is now in Loksabha, and he has started laying the foundation to do Jagdeep Dhankar of Om Birla.
Watch this… pic.twitter.com/9v9tkoa8nF
— Shantanu (@shaandelhite) July 2, 2024
কল্যাণ যখন ‘কিতকিত’ বলতে বলতে দু’হাত উপর থেকে নীচের দিকে নামাচ্ছেন, তখন দেখা যায় হাসির রোল উঠেছে সংসদে। যদিও কল্যাণের পাশেই বসে থাকা লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুগম্ভীর মুখেই বক্তৃতা শুনছিলেন। এর পর কল্যাণ যখন অন্য সাংসদদের দিকে তাকিয়ে তাঁর কথা বলছেন, তখন স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, চেয়ারের উদ্দেশে বক্তৃতা করতে। তা শুনে আবার শুরু করেন কল্যাণ। স্পিকারের উদ্দেশে কল্যাণ বলেন, ‘‘স্যর, আমি তো আপনাকেই দেখছি। অন্য কাউকে দেখছি না। আপনার থেকে বেশি স্মার্ট এখানে কেউ নেই। ভাল অভিনেত্রীও এসেছেন। কিন্তু তাঁকে দেখছি না, আপনাকেই দেখছি।’’ এ কথা শুনে তৃণমূলের অভিনেত্রী সাংসদ জুন মালিয়া, শতাব্দী রায়েরাও হাসতে থাকেন। অনেকের মতে, কল্যাণ ভাল অভিনেত্রী বলতে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী কঙ্গনা রানাউতকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন।
এছাড়াও ভোটে CISF-এর ভূমিকা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তোলেন কল্যাণ। তিনি বলেন, ‘বিজেপির পক্ষে ভোট দিতে লোকসভার সময় মোতায়েন থাকা CISF জওয়ানরা ভোটারদের হুমকি দিয়েছেন।’ পঞ্চম দফার ভোটে দুই CISF জওয়ান মহিলাদের শ্লীলতাহানি করেন তাঁর সংসদীয় এলাকায়। তিনি আরও বলেন, ‘এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে লজ্জার, যে তাঁর সিআইএসফ বাড়িতে ঢুকেছে।’ কল্যাণে এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে তুমুল বিরোধিতা শুরু হয়। পালটা কল্যাণ বলেন, ‘শুনুন ভাই দুই CISF অফিসার গ্রেফতার হয়েছেন। কেন বলব না? কেন সাত দফার ভোট হল?’
নিজের বক্তৃতায় নির্বাচন কমিশনকেও তীব্র আক্রমণ করেন কল্যাণ। সংসদে শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন অনেক সময়ে বিজেপি নেতাদের কথায় কাজ করেছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, সাত, আট বা দশ হাজারের মতো অল্প ভোটে যে সব আসন বিজেপি জিতেছে, সেগুলি সম্ভব হয়েছে নির্বাচন কমিশনের বদান্যতায়।