নিজের রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করবেন না। বিজেপি প্রার্থী কঙ্গনা রানাউতকে (Kangana Ranaut) একহাত নিয়ে এই কথা বললেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রপৌত্র চন্দ্র বসু (Chandra Bose)। উল্লেখ্য, বছরখানেক আগেই কঙ্গনা বলেছিলেন, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজি। লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha 2024) আগে সেই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল কটাক্ষের শিকার হয়েছেন মান্ডির বিজেপি (BJP) প্রার্থী।
কী বলেছিলেন কঙ্গনা? ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো ক্লিপে কঙ্গনাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি একটা কথা আজ পরিষ্কার করে বলতে চাই, যখন আমরা স্বাধীনতা পাই তখন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, উনি কোথায় গেলেন?…’’। পুরনো সেই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করে কঙ্গনাকে নিশানা করেন ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) কার্যকরী সভাপতি কেটিআর। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘উত্তরের এক বিজেপি প্রার্থী বলছেন নেতাজি আমাদের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। আর দক্ষিণের আর এক বিজেপি প্রার্থী মহাত্মা গান্ধীকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী বলছেন। এই সব মানুষ কোথা থেকে স্নাতক হয়েছেন?’’ নেটাগরিকেরাও কঙ্গনার পুরনো ভিডিয়ো নিয়ে সামজমাধ্যমে নানা ধরনের মন্তব্য করতে শুরু করেছে।
তার পরে এই প্রথমবার মুখ খুললেন নেতাজির (Netaji Subhas Chandra Bose) পরিবারের কোনও সদস্য়। এক্স হ্যান্ডেলে চন্দ্র বসু লেখেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে কারওই ইতিহাস বদল করার অধিকার নেই। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে সৈনিক, দৃঢ়চেতা পুরুষ এবং দুরদর্শী। অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। নেতাজিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সকল ভারতীয়কে একজোট করে স্বাধীনতার লড়াইয়ে সামিল করিয়েছিলেন। যে বা যারা তাঁর আদর্শ মেনে চলেন, তাঁদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে।’ তাঁর কথায়, নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ইতিহাসকে বিকৃত করা উচিত নয়। এই পোস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কঙ্গনা ছাড়াও অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডাকে ট্যাগ করেন নেতাজির প্রপৌত্র।
Netaji Subhas Chandra Bose was a political thinker,soldier,statesman, visionary and the 1st PM of undivided India.The only leader who could unite all communities as Bharatiyas to fight for India’s freedom.Real respect to the leader would be to follow his inclusive ideology. pic.twitter.com/W4zjrHYOVs
— Chandra Kumar Bose (@Chandrakbose) April 6, 2024
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নেতাজির প্রপৌত্র। ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। দু’বার বিজেপির টিকিটে নির্বাচনেও লড়েন তিনি। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে আশাহত হয়ে গেরুয়া শিবির ত্যাগ করেন। ইস্তফাপত্রে লিখেছিলেন, “২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। নেতাজির আদর্শ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজেপির মধ্যেই আজাদ হিন্দ মোর্চা শুরু করারও কথা ছিল। কিন্তু এখনও সেসব কিছুই হয়নি।” চন্দ্র বাবু দাবি করেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য দুই ক্ষেত্রেই তাঁর কথাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে দল ছাড়ার পরে একাধিকবার বিজেপি নেতৃত্বকে তোপ দাগতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এবার কঙ্গনার বিতর্কিত মন্তব্যকে হাতিয়ার করেও বিজেপিকে নিশানা করলেন।