কাঁওয়ার যাত্রা মামলায় অন্তর্বর্তী নির্দেশের মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে এ-ও জানায়, কেউ যদি সদিচ্ছায় দোকানের বাইরে নাম-পরিচয় লিখতে চান, তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু কাউকে জোরপূর্বক সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য করা যাবে না।
চলতি মাসে শুরু হতে চলেছে কানোয়ার যাত্রা (Kanwar Yatra)। তার আগে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) সরকার নির্দেশ দিয়েছে, কানোয়ার যাত্রার প্রতিটি রুটে যত খাবারের দোকান রয়েছে, তার সবকটিতেই বড় বড় ব্যানার দিয়ে লিখতে হবে দোকান মালিকের নাম। যার মূল উদ্দেশ্য, পুণ্যার্থীরা যাতে আলাদাভাবে চিনতে পারেন হিন্দু ও মুসলিম দোকানগুলিকে। কেবল উত্তরপ্রদেশ নয়, একই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) এবং উত্তরাখণ্ডেও (Uttarakhand)।
পুণ্যার্থীদের যাতে সংশ্লিষ্ট হোটেল বা ধাবা নিয়ে কোনও সংশয় না থাকে, তার জন্যই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। রাস্তায় খাবারের অস্থায়ী স্টলগুলিকেও ওই নির্দেশিকা মেনে চলার কথা বলা হয়। এই নির্দেশিকা জারি হতেই দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। বিরোধীরা ধর্মীয় বিভাজনের অভিযোগ তোলে বিজেপির বিরুদ্ধে।
নির্দেশিকার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও একটি মামলা করেছিলেন। গত শুনানিতে এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে।
শুক্রবার কাঁওয়ার মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, পরবর্তী শুনানি স্থগিতাদেশর ৫ অগস্ট পর্যন্ত বজায় থাকবে। বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘কেউ যদি স্বেচ্ছায় দোকানের বাইরে নাম প্রকাশ করতে চান, তাতে কোনও সমস্যা নেই। আমাদের নির্দেশে বলা হয়েছে, কাউকে দোকানের বাইরে নাম-পরিচয় লিখতে বাধ্য করা যাবে না।’’
উত্তরপ্রদেশ সরকার শুক্রবার আদালতে তাদের নির্দেশিকা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে। সরকার পক্ষের আইনজীবী মুকুল রোহতগি আদালতে জানান, আইন মেনেই দোকানদারদের নাম এবং পরিচয় সাইনবোর্ডে লেখার কথা বলা হয়েছিল। যোগী সরকারের সাফাই, কানওয়ার যাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের তরফে একাধিকবার অভিযোগ পেয়েই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়। এ বিষয়ে আদালত বলে, ‘‘গোটা রাজ্যের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য করা হোক। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এলাকার জন্য নয়। আপনারা নিশ্চিত করুন সব জায়গায় এই নিয়ম প্রয়োগ করা হয়েছে।’’
বিরোধী পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ৬০ বছর ধরে কানোয়ার যাত্রা চলছে। এবার এমন নির্দেশ জারি না হলেও কানোয়ার যাত্রায় কোনও প্রভাব পড়ত না। সব পক্ষের যুক্তি শোনার পর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয় ৫ অগাস্ট। ততদিন পর্যন্ত যোগী সরকারের নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি রাখা হয়।