কানোয়ার যাত্রায় পথের ধারে থাকা খাবারের দোকানগুলিতে দোকানদারের নাম-পরিচয় লিখে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজেপি শাসিত দুই রাজ্য উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে রবিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। সোমবার উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তে এবার অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। এদিনের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছে , কেবল মাত্র কোন ধরণের খাবার বিক্রি করা হয় তা দোকানের সামনে টাঙ্গিয়ে দিলেই হবে। দোকান মালিকের নাম, ধর্ম বা জাতের উল্লেখ করার কোনোই প্রয়োজন নেই। একইসঙ্গে দোকানে কোনও মুসলিম কর্মচারী থাকলে তাও আলাদা করে জানিয়ে দেওয়ার দরকার নেই।
বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে আগামী সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে কানোয়ার যাত্রা। প্রতি বছরই শ্রাবণ মাসের শুরুতে এই যাত্রায় শৈবতীর্থগুলির উদ্দেশে পাড়ি দেন পুণ্যার্থীরা। কাঁওয়ার যাত্রার পথে যে সমস্ত খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের নাম বোর্ডে লিখে রাখার জন্য সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছিল মুজফ্ফরনগর জেলা পুলিশ। এর আগে পুণ্যার্থীদের সম্মান জানিয়ে কাঁওয়ার যাত্রাপথে আমিষ বিক্রি বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “কাঁওয়ার যাত্রীদের যাত্রাপথের দু’পাশের যে সব খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের বাধ্যতামূলক ভাবে দোকানের বোর্ডে নিজেদের নাম লিখে রাখতে হবে।’’ পরে অনুরূপ সিদ্ধান্তের কথা জানায় উত্তরাখণ্ড সরকারও।
কিন্তু এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। নির্দেশ পুনর্বিবেচনার দাবি ওঠে এনডিএ-র অন্দর থেকেই। কানোয়ার নির্দেশিকার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছিল বেশ কয়েকটি পিটিশন। আবেদনকারীদের তালিকায় ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তিনি জানিয়েছেন, এই নির্দেশের ফলে সাম্প্রদায়িক অশান্তির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে এবং কয়েক জনের জীবিকা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এদিন উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, দিল্লি ও মধ্য প্রদেশকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। চারদিন পরে এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে।