কানোয়ার যাত্রা রুটে খাবারের দোকানে লাগাতে হবে দোকানদারের নাম ও পরিচয়। বিধান দিয়েছিল যোগীর প্রশাসন। এবার উত্তরপ্রদেশ সরকারের নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রবিবারই সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল মামলা। অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ সিভিল রাইটসের পক্ষ থেকে দায়ের হওয়া এই মামলার শুনানি হবে সোমবার, ২২ জুলাই। জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করবেন।
চলতি সপ্তাহে মুজফফরনগর পুলিশ কানওয়ার যাত্রা রুটে সমস্ত খাবারের দোকানে মালিকদের নাম উল্লেখ করার নির্দেশ জারি করে। জেলা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক সিং বলেন, ‘কানওয়ার যাত্রা রুটের হোটেল, রেস্তরাঁ, ধাবা, ঠেলা সহ সমস্ত খাবারের দোকানে মালিকদের নাম নেমপ্লেটে উল্লেখ করতে হবে।’ এরপর এই নির্দেশিকা জারি করেন খোদ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কানওয়ার যাত্রার প্রতিটি রুটে যত খাবারের দোকান রয়েছে সেখানে বড় বড় ব্যানারে লিখতে হবে দোকান মালিকের নাম। যার উদ্দেশ্য, পুণ্যার্থীদের কাছে হিন্দু ও মুসলিম দোকানগুলির পৃথক চিহ্নিতকরণ।
শুধু বিরোধীরা নয়, বিজেপির শরিকরাও অনেকেই যেমন সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে। এলজেপির চিরাগ পাসোয়ান আগেই জানিয়েছেন তিনি এমন সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন না। রাষ্ট্রীয় লোক দলের প্রধান জয়ন্ত চৌধুরি এই পরিস্থিতিতে যোগী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন। তিনিও সাফ জানিয়ে দিলেন, না ভেবেচিন্তেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাষ্ট্রীয় লোক দল বর্তমানে বিজেপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জোট শরিক। আর জয়ন্ত সেই দলের প্রধান। এলজেপি, আরএলডি ছাড়াও জেডিইউ-ও প্রকাশ্যে এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে।
জাভেদ আখতার, সোনু সুদদের মতো সেলেবরা এই নির্দেশিকার বিরোধিতা করেন। প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন বিজেপির (BJP) জোটসঙ্গী চিরাগ পাসওয়ানও। তাঁদের বক্তব্য, এই নির্দেশিকা বৈষম্যমূলক। সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় সারির নাগরিক হিসাবে দেগে দেওয়ার চেষ্টা। এমনকী যোগীরাজ্যকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করেন জাভেদ আখতার। তুমুল বিতর্কের মাঝেই রবিবার মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, “এই ধরনের নির্দেশ সংবিধানের ১৭ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করে। এটা শুধুমাত্র সংবিধান বিরোধী নয়, অস্পৃশ্যতাকে ইন্ধন ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভেদাভেদ।”