সংবাদপত্র এবং টিভি মাধ্যমে বিজেপির দেওয়া বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। আদালত বিজেপির বিরুদ্ধেই রায় দিয়েছিল। সিঙ্গল এবং ডিভিশন বেঞ্চ কোনওটিতেই সুবিধা পায়নি গেরুয়া শিবির। এরপরই তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। দেশের শীর্ষ আদালতেও ধাক্কা খেল বিজেপি।
সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় জানিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে তারা কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। একই সঙ্গে, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল বিজেপি, তা প্রাথমিকভাবে ‘অপমানজনক’ বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের অবসরকালীন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ এমনই।
বিজেপির পক্ষ থেকে এদিন শীর্ষ আদালতে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী পি এস পাতাওয়ালিয়া। তিনি বলেন, এই বিজ্ঞাপন তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এবং হাইকোর্ট বিজ্ঞাপনের ওপর এই ধরণের ইনজাংশন দিতে পারে না। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে বিচারপতিরা তা শুনতেই রাজি হলেন না। বিজেপির উদ্দেশে তাঁদের মন্তব্য, ”এসব বিজ্ঞাপন অন্যকে খাটো করে দেখানো, এতে আপনাদেরই শুধু লাভ হয়।” এর পর বিচারপতিদের পরামর্শ, এনিয়ে বক্তব্য থাকলে হাইকোর্টে যেতে হবে। তাঁদের আরও বক্তব্য, প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে বিজ্ঞাপনগুলিতে (Advertisement) অপরকে আক্রমণ করা রয়েছে। নিজের প্রচার করা যায়, কিন্তু অপরকে আক্রমণ করে নয়।
লোকসভা নির্বাচনের (2024 Lok Sabha Election) মাঝে বাংলার শাসকদলের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বিজ্ঞাপন দেয় গেরুয়া শিবির। তাতে তৃণমূলের উদ্দেশে এমন কিছু শব্দ প্রয়োগ করা হয়, যা আইনের চোখে Unverified. এনিয়ে তৃণমূল (TMC) হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে। গত ২০ মে বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপনের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চ জানিয়েছিল, বিতর্কিত বিজ্ঞাপন আর কোনও সংবাদমাধ্যমে দেওয়া যাবে না। সেই রায়ের পালটা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে বিজেপি। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়নি। উলটে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মামলাকারীকেই ভর্ৎসনা করেন। তাঁর কড়া মন্তব্য, যে কোনও বিজ্ঞাপনের একটা লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত। এর পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি (BJP)।