Lok Sabha Election Results 2024: yogendra yadav passed in prediction. prashant kishors prediction gone horribly wrong

Lok Sabha Election Results 2024: ভবিষ্যদ্বাণী করে ‘ফার্স্ট বয়’ যোগেন্দ্র যাদব! ডাহা ফেল প্রশান্ত কিশোর

ভোটকুশলী থেকে ইদানিং রাজনৈতিক বিশ্লেষক হয়ে উঠেছেন প্রশান্ত কিশোর। এবারের দীর্ঘ ভোট পর্ব জুড়ে তিনি নানা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিস্তর। প্রশান্ত কিশোরকে বিজেপি ‘দালাল’ও বলেছেন কেউ কেউ। শেষ দফা ভোট চলাকালীনই নিজস্ব ‘এক্সিট পোল’ ঘোষণা করেছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore)। দাবি করেন, “বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ এবারের লোকসভা ভোটেও ‘ক্লিন সুইপ’ করবে (নিরঙ্কুশ জয় পাবে)। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ৩০৩টি আসনে জিতেছিল। এবারও তাদের প্রাপ্ত আসন তার আশপাশেই থাকবে। এমনকী ৩০৩ ছাড়িয়েও যেতে পারে।” জনতার রায়ে প্রশান্তের সেই দাবির অনেক আগেই থমকাল বিজেপি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল না তারা। কোনও রকমে ৩০০-র গণ্ডি ছুঁল এনডিএ জোট।

গত লোকসভা ভোটে বাংলায় আঠারোটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। সেই ধাক্কা সামলাতে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ নেওয়া শুরু করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছিলেন পিকে। তা এতটাই যে তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকের মঞ্চেও দেখা গেছিল তাঁকে। এহেন এবার লোকসভা ভোটের আগে দাবি করেছিলেন, বাংলায় ভাল ফল করবে বিজেপি। গত লোকসভা ভোটে তারা যত আসনে জিতেছিল, তার থেকে আসন কমবে না। এমনকি প্রশান্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এও বলেছিলেন, সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ঘটনা তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতায় ভরপুর অক্সিজেন যোগাবে।

এখানেই থামেননি পিকে। তিনি বলেছিলেন,“দিল্লিতে বসে অনেকে ভাবছেন বাংলায় বিজেপি খতম হয়ে গেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও ভুল ভাবনা রাখবেন না। বিজেপি এখন বাংলায় খুব মজবুত একটা রাজনৈতিক শক্তি। এবং গত ১২-১৩ বছর সরকারের থাকার ফলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা যেরকম উত্তরোত্তর বাড়ছে, তার ফলে তাদের জমি ধরে রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে।” তাঁর বক্তব্য ছিল, “এই সব কারণেই মনে করছি যে উনিশের ভোটে বিজেপি বাংলায় যত আসনে জিতেছিল, তার থেকে কমবে না। বিধানসভা ভোটের তুলনায় বিজেপি বাংলায় অনেক ভাল ফল করবে। বেশ ভাল ফল করবে”।

এক্সিট পোলের ফল প্রকাশ হওয়ার পর প্রশান্ত কিশোর একটি টুইট করেছিলেন। তাতেও তাঁর অহমের ছাপ ছিল স্পষ্ট। প্রশান্ত কিশোর তাতে লিখেছিলেন, এর পর থেকে ভোট বা রাজনীতির কথা বলতে হলে, খালি বসে থাকা ভুয়ো সাংবাদিক, বড় বড় কথা বলা নেতা আর সোশাল মিডিয়ায় স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞদের কথা শুনে সময় নষ্ট করবেন না।
অনেকের প্রশ্ন হল, এখন প্রশান্তের কথা শুনেই বা মানুষ সময় নষ্ট করবে কেন? পর্যবেক্ষকদের মতে,প্রশান্ত কিশোর যে দম্ভ ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথাগুলি বলছিলেন, তাতেই মনে হচ্ছিল তাঁর স্বার্থ রয়েছে। বিশেষ করে কারও কারও মনে হতে শুরু করেছিল যে পিকে বিজেপির মুখপাত্র হয়ে কাজ করছেন। লোকসভা ভোটের এই ফলাফলের পর প্রশান্তের বিশ্বাসযোগ্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল।

অন্যদিকে ভোট পর্বের একেবারে শেষের দিকে অনেক দিনের পুরনো বিশ্লেষক যোগেন্দ্র যাদব এবারের ভোটে বিজেপি ও কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রাপ্তি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন।যোগেন্দ্র যাদব বলেছিলেন, বিজেপি ২৪০ থেকে ২৬০ টি আসন পেতে পারে। এনডিএ-র অন্য সহযোগীরা ৩৪-৪৫ টি আসন পেতে পারে। ফলে এনডিএ জোট সব মিলিয়ে পেতে পারে ২৭৫ থেকে ৩০৫ টি আসন। যোগেন্দ্র যাদবের মূল্যায়ন অনুসারে, কংগ্রেস ৮৫ থেকে একশোটি আসন পেতে পারে। ইন্ডিয়া ব্লক পেতে পারে ১২০ থেকে ১৩৫ টি আসন। সেক্ষেত্রে যোগেন্দ্র যাদবের মূল্যায়ন পুরোপুরি মিলে গিয়েছে বলা যায়। আর ভোট রাজনীতিতে হেভিওয়েট বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোর পিছিয়ে পড়লেন, তা বলাই যায়।