আর মাত্র হাতে গোনা দুদিন। তারপরেই শুরু হয়ে যাবে পবিত্র রমজান মাস। ত্যাগ ও আত্মসংযমের এই মাসে ঘিরে ইসলামধর্মাবলম্বীদের মধ্যে থাকে তুমুল উত্তেজনা, আনন্দ।
রমজানের প্রস্তুতি মানেই খাবারের সমাহার সংগ্রহের প্রস্তুতি নয়; বরং আত্মিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করা। আর সেকথা মাথায় রেখেই লখনৌয়ের নবাবী হেঁসেল নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। নাম শুনে মনে হবে এযেন কোনো রেস্তোরা। কিন্তু বিষয়টি তা নয়। লখনৌ আমাদের সকলের কাছে পরিচিত নবাবদের শহর হিসাবে। এই শহরের প্রায় প্রতিটি রীতিনীতির মধ্যে লুকিয়ে আছে নবাবী ইতিহাস। শোনা যায়, খাবার বিতরণের প্রথা শুরু করেছিলেন অবধের তৃতীয় নবাব মোহাম্মদ আলী শাহ ১৮৩৯ সালে শুরু করেছিলেন। নবাবের ট্রাস্ট তহবিলের অন্তর্গত ৩০০০ পরিবারকে সেই সময় ইফতার ও রাতের দেওয়া হত।সেটি কালে কালে নবাবী হেঁসেল, বা নবাবের রান্নাঘর হিসাবে পরিচিত পায়।
আরও পড়ুন: মদ্যপান যারা করে তারা মহাপাপী, ভারতীয় নন! ফুঁসে উঠলেন নীতীশ কুমার
এই রেস্তোরা থেকে প্রতি বছর প্রায় ৬০০ দরিদ্র পরিবারকে ইফতার দেওয়া হয়। হুসাইনাবাদ অ্যান্ড অ্যালাইড ট্রাস্টের (এইচএএটি) অধীনে থাকা ১৩টি মসজিদে প্রতিদিন এই খাবার বিলি করা হয়। মহামারীর কারণে গত দুবছর এই কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু এবছর ফের খাবার বিলি হবে জানিয়েছে ট্রাস্ট তহবিল কতৃপক্ষ। ট্রাস্ট তহবিলের একজন কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান জানিয়েছেন, “দুবছর পর ফের টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। এবছর ইফতার ও খাবার বিলি করার করার জন্য ১৯ লক্ষ টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে।”
তা এই শাহী রান্নাঘর থেকে কি বিলি করা হয় জানতে চান? ইফতারিতে বান বাটার, প্যাটিস, সামোসা, কেক, পাকোডা, চিপস, ফল ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে। রাতের খাবার হিসাবে দেওয়া হয় দুটি তন্দুরি রোটি এবং ডাল বা একটি আওয়াধি খাবার যার নাম ‘তালে হুয়ে আলু কা সালান’। নবাবের রান্নাঘরে সকাল ৮টা থেকে কাজ শুরু হয়। বিকেল ৪তের মধ্যে খাবার প্যাকিং শেষ করে ফেলা হয় আর তারপর শুরু হয় দুস্থদের মধ্যে বিলির কাজ।