বিবাহ বিচ্ছেদের পরে স্ত্রীর ভরণ-পোষণের সমস্ত দায়িত্ব স্বামীকেই নিতে হয়। তার জন্য প্রতিমাসে কিংবা এককালীন কিছু অর্থ প্রদান করতে হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে, স্ত্রীর ভরণ-পোষণের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয় তা স্বামীর সামর্থের বাইরে । সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্ট একটি নজিরবিহীন রায় দিয়েছে, যেখানে স্পষ্ট করে বলা হয় স্ত্রীর ভরণ-পোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্বামীর নয় । সেই দায়িত্ব পরিস্থিতির সঙ্গে বদলাতে পারে।
দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে , CRPC–র অধীনে স্ত্রীর ভরণ-পোষণ সব সময়ের দায় নয় । পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। সেই অনুযায়ী
খোরপোষ বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে। বিচারপতি চন্দ্রধারী সিং বলেছেন , অন্তর্বর্তী বা স্থায়ী ভরণ-পোষণ প্রদানের উদ্দেশ্য হল স্ত্রীকে শাস্তি দেওয়া নয় বরং বিবাহের ব্যর্থতার কারণে নির্ভরশীল স্ত্রী যাতে নিঃস্ব না হন তা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: আঁধারে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর আদি বাড়ি! ভারতে এখন সব গ্রামে বিদ্যুৎ: মিউনিখে দাবি মোদীর
বিচ্ছেদের পর ট্রায়াল কোর্ট এক মহিলাকে মাসিক ৩০০০ টাকা ভরণ-পোষণের নির্দেশ দিয়েছিল তার স্বামীকে। কিন্তু ওই মহিলা আবার পিটিশন জারি করে যুক্তি দেন, তার জন্য মাসিক ৩০০০ টাকা যথেষ্ট নয় । তাছাড়াও তার স্বামীর আয় অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে তিনি দাবি করেন, যেন তাকে প্রতি মাসে ৩৫,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এছাড়াও তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে তার স্বামীর মাসিক আয় ৮২,০০০ টাকা। তার স্বামী নাকি নিজের প্রকৃত আয় সম্পর্কে ট্রায়াল কোর্টকে জানাননি।
স্ত্রীর আবেদনের ভিত্তিতে, স্বামী দাবি করেছিলেন যে তিনি একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে এবং ক্যাব চালক হিসাবে কাজ করে প্রতি মাসে ১৫,০০০ টাকা উপার্জন করছেন । এছাড়াও তার বৃদ্ধ অসুস্থ পিতামাতার যত্ন নিতে হয়। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে আদালত রায় দিয়ে জানিয়েছে, ভরণ-পোষণের জন্য উপযুক্ত অর্থ নির্ধারণের জন্য স্বামীর আর্থিক সামর্থ্য, পরিবারের সদস্যদের দায়-দায়িত্ব এবং তার নিজের ভরণ-পোষণের খরচও বিবেচনায় নিতে হবে। আদালত স্ত্রীর আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছে যে ট্রায়াল কোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ করার কোনো বাধ্যতামূলক কারণ তারা খুঁজে পাননি। রায় অনুযায়ী ওই মহিলা ভরণ-পোষণ হিসেবে মাসিক ৩০০০ টাকা করে পাবেন। এমনটাই সাফ জানিয়ে দেয় কোর্ট।
আরও পড়ুন: UP: পেটে চলে গেল জ্যান্ত বান মাছ! ডাক্তার না দেখিয়ে ঝাড়ফুঁক, মৃত্যু হল যুবকের