এক দশক পর দেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। আপাতত ২৩১-এ থামতে হয়েছে তাদের। দেশের জনতার রায়ে খুশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই রায়ের পর নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের পদত্যাগ করা উচিৎ, বলছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদত্যাগ দাবি করে এদিন মমতার সাফ বক্তব্য, ‘আমি খুশি মোদী একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। ওঁর পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত। উনি ৪০০ পার বলেছিলেন, আমি পগারপার বলেছিলাম। এখন ওদের চন্দ্রবাবু নাইডু আর নীতীশ কুমারের পা ধরতে হচ্ছে। মানুষ ওদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।’ মমতার আরও সংযোজন, “মোদি-শাহের অহংকার ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে।” এর পরই তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, “দেশের জন্য খতরনক কাজ করেছেন ওরা। বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন মোদী। দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি। ওরা ইন্ডিয়াকে ভাঙতে পারবে না।”
রাজ্যের ফলাফল তো বটেই, গোটা দেশে ইন্ডিয়া জোট যে ফল করেছে তাতে বিরোধীদের মুখে চওড়া হাসি, কোনও সন্দেহ নেই। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, ‘আমি ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের অভিনন্দন জানাই। আমি ওঁদের পাশে আছি। অখিলেশ যাদব, শরদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিহারের ফলাফল সঠিক নয়। তেজস্বী যাদব জানিয়েছেন, এখনও গণনা অনেক বাকি। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী, হেমন্ত সোরেনের স্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি মমতা। বলেছেন, ‘রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধীকেও আমি অভিনন্দন জানিয়ে মেসেজ পাঠিয়েছি। ওঁরা ব্যস্ত, হয়তো দেখার সময় পাননি।োর যোগাযোগ না করলেও সমস্যা নেই। কংগ্রেসকে আমি বলেছিলাম ইন্ডিয়ার সঙ্গে থাকলে ১০০ সিট পাবে।আমি এই রাজ্যে ২টি আসন দিতে চেয়েছিলাম। দুটিতেই জয় হত। তাতে ইন্ডিয়ার লাভ হত।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে লেলিয়ে দিয়ে যেভাবে বিরোধীদের চেপে রাখা হয়েছিল, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা কেউ ভাবতে পারেনি। সিবিআই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্স, বিজেপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অত্যাচার সত্ত্বেও গোটা দেশে এই ফল।’ সন্দেশখালির ঘটনাকে ইস্যু করে ভোটের আগে তৃণমূলকে কোণঠাসা করে দিয়েছিল বিজেপি। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সন্দেশখালির মা বোনেরা সত্যিটা বুঝতে পেরেছেন। আমরা সন্দেশখালিতেও জিতেছি। বসিরহাট লোকসভায় বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছি।’ তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, বিজেপির এই হারের পিছনে দায়ী প্রধানমন্ত্রীর অহঙ্কার। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি শুনলাম পোস্টাল ব্যালটে গণনার সময় পিছিয়ে ছিলেন মোদী। এত অহঙ্কার ভাল নয়। আমি মাথা নিচু করে চলি। আমাদের কোনো কৃতিত্ব নেই, সবটাই মানুষের। এখানে প্রচারে এসে আমাদের দলের নেতাদের নামে কুৎসা রটিয়ে গেছে বিজেপি। আমি প্রত্যেকের নামে মানহানির মামলা করব।’
ভোট গণনার ক্ষেত্রেও কারচুপি হয়েছে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘যে যে আসনে আমরা হেরেছি সেগুলো খুবই কম ব্যবধানে। যে সমস্ত অবজার্ভার পাঠানো হয়েছে তাঁরা বিজেপির লোক। পুনর্নির্বাচনের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনে যাব। চার থেকে পাঁচটা সিটে আমাদের ইচ্ছে করে হারানো হয়েছে। তমলুকে ছাপ্পা দিয়ে জিতেছে বিজেপি।’