একে একে ১৪! ডাক্তার সেজে ১৪ জন মহিলাকে বিয়ে (Marriage) করার পরে অবশেষে পুলিশের কবলে অভিযুক্ত। ঘটনা ওড়িশার (Odisha)। জানা যাচ্ছে, এই ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছিলেন তিনি। বছর ৫৪-র এই অভিযুক্তের নাম বিধুপ্রকাশ সোয়াইন ওরফে রমেশ। মূলত মাঝবয়সি অথবা ডিভোর্সি মহিলারাই অভিযুক্তের টার্গেট ছিলেন বলেও জানা যাচ্ছে।
ভুবনেশ্বরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার উমাশংকর দাস জানাচ্ছেন, ওড়িশা ছাড়াও পাঞ্জাব, দিল্লি, অসম, ঝাড়খণ্ডের মোট ৭টি শহরে জাল বিছিয়েছিলেন বিধুপ্রকাশ। নিজের পরিচয় দিতেন ডাক্তার বলে। কোথাও কোথাও সরকারি অফিসারের পরিচয়ও নাকি দিয়েছিলেন তিনি। মূলত বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইটগুলিতেই তিনি ফাঁদ পাততেন। মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে ভালিয়ে ফাঁসাতেন ওই মহিলাদের। পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত টার্গেট বানাতেন যে মহিলাদের তাঁরা বেশির ভাগই উচ্চশিক্ষিত এবং বহু সরকারি-বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী। উমাশংকরের কথায়, ”ওঁদের বিপুল অর্থের দিকেই নজর থাকত অভিযুক্তের।”
বিবাহ-সম্পর্কিত ওয়েরবসাইটগুলিতে নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে মহিলাদের সঙ্গে আলাপ জমাতেন। শিকার হিসেবে বেছে নিতেন মূলত মাঝবয়সি অবিবাহিত মহিলা, ডিভোর্সিদের। এ ভাবে একে একে তাঁর শিকারের ফাঁদে ফেলেন মহিলা চিকিৎসক, আধাসেনায় কর্মরত মহিলা, আইনজীবী এমনকি উচ্চশিক্ষিত মহিলাদেরও।
অভিযুক্তের প্রথম শিকার ১৯৮২ সালে। ওই বছরে এক মহিলাকে বিয়ে করেন তিনি। দ্বিতীয় বিয়ে করেন ২০০২ সালে। ভুবনেশ্বরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ঊমাশঙ্কর দাশ জানিয়েছেন, প্রথম এবং দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর মোট পাঁচ সন্তান। ২০০২ থেকে ২০২০-র মধ্যে বিবাহ-সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে আলাপ জমিয়ে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করার পর বিয়ে করতেন। এবং ঘটনাচক্রে, যত জনকে তিনি বিয়ে করছেন, কেউই তাঁর আগের বিয়ে সম্পর্কে ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।
অভিযুক্তের বাড়ি তল্লাশি করে ১১টি এটিএম কার্ড ও ৪টি ভুয়ো আধার কার্ড মিলেছে। কার্ডগুলিতে নানা রকম নাম ব্যবহার করেছিলেন তিনি। বিধুপ্রকাশের ‘গুণপনা’ অবশ্য আগেও সামনে এসেছে। হায়দরাবাদে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল টাকার বিনিময়ে চাকরির ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগে। সেই সময় সারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ২ কোটি টাকা জোগাড় করে ফেলেছিলেন অভিযুক্ত। এছাড়াও কেরলেও একটি জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে হয়েছিল তাকে।