শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে(Shraddha Walker ) শ্বাসরোধ করে খুন করে তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করে কেটে দিল্লির মেহরৌলির জঙ্গলে ফেলে আসতেন তাঁরই লিভ-ইন সঙ্গী আফতাব পুনাওয়ালা। কিন্তু ওড়িশার ভুবনেশ্বরের ঊষসী হত্যাকাণ্ডও আরও ভয়াবহ ছিল। স্ত্রীকে খুন(Murder) করে ৩০০ টুকরো করছিলেন প্রাক্তন কর্নেল।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৩ সালের ৩ জুন। স্ত্রী ঊষসীকে (৬২) খুন করার অভিযোগ ওঠে বছর একাত্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সোমনাথ পারিদার বিরুদ্ধে। ১৯৯২ সালে সেনা থেকে অবসর নেন পারিদা। সেনায় চিকিৎসক ছিলেন তিনি।
প্রাতর্ভ্রমণে এক অল্পবয়সি মহিলার সঙ্গে কর্নেলের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। সেই মহিলা কর্নেলকে ব্ল্যাকমেল করতেন। আর তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্যদিন ঝামেলা হত।
অবসরের পর ভুবনেশ্বেরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরামর্শদাতা চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন সোমনাথ। বাড়িতে স্ত্রী ঊষসী ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। ছেলেমেয়ে দু’জনেই কর্মসূত্রে বিদেশে থাকতেন।
তারা নিয়মিত বাবা মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলত। কিন্তু বহু দিন মায়ের সঙ্গে কথা হয়নি। কেবল বাবাই কথা বলত। তাতে কেমন যেন সন্দেহ হয় ছেলের। তিনি মামা রঞ্জনকে পাঠান খোঁজ নিতে। রঞ্জন দিদির কথা জানতে চাইলে সোমনাথ বলেন, তিনি মেয়ের কাছে দুবাইয়ে আছেন। বাড়ি থেকে বিদঘুটে ধরণের গন্ধ আসছিল। খটকা লাগে রঞ্জনের।
সোমনাথের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সেই অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সোমনাথের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতেই স্তম্ভিত হয়ে যায়।সোমনাথের ঘরে ঢুকতেই পুলিশ দেখতে পায় চার দিকে ছড়ানো রয়েছে বেশ কয়েকটি টিফিন বাক্স। সেগুলি খুলতেই চমকে ওঠেন তদন্তকারীরা। প্রতিটি টিফিনবাক্সে ঠাসা ছিল মানুষের মাংসের টুকরো। এছাড়া লোহার ট্যাঙ্কে ছিল মাংসের টুকরো। সোমনাথের কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়তেই চেপে ধরে পুলিশ। তখন সোমনাথ জানান, স্ত্রীকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন তিনি। তার পর গলার নলি কেটে দেন।
স্ত্রীর দেহ লোপাট করার পরিকল্পনাও করেন সোমনাথ। বাজার থেকে দু’টি বড় ট্রাঙ্ক, ২২টি টিফিন বাক্স কিনে আনেন তিনি। তার পর করাত দিয়ে উষসীর দেহ টুকরো টুকরো করেন।সেনায় চিকিৎসক হিসাবে কাজ করায় সেই অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগিয়েছিলেন সোমনাথ। ছুরি, করাত এমনকি অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন সরঞ্জাম স্ত্রীর দেহ কাটতে এবং দেহাংশ টুকরো করার কাজে লাগিয়েছিলেন(murder)।
জেরায় পুলিশকে সোমনাথ বলেছিলেন, “স্ত্রীর দেহ ৩০০ টুকরো করেছি। তার পর সেগুলি টিফিন বাক্সে, আর ট্রাঙ্কে ভরে রেখেছিলাম। দুর্গন্ধ লুকোতে দেহাংশের উপর ফিনাইল ঢালতাম।” তারপরও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেন সোমনাথ। ক্লিনিকে যেতেন। কেবল স্ত্রীর প্রসঙ্গ উঠলে এড়িয়ে যেতেন।