আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ফের কড়া ভাষায় মণিপুর সরকারকে ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য,’মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। গত দু’মাসে সেরাজ্যে আইনের শাসন বলে কিছুই অবশিষ্ট নেই। জনতাকে রক্ষা করতে ব্যর্থ পুলিশ প্রশাসন।’ সেই সঙ্গে গত তিন মাসের গোষ্ঠীহিংসার ঘটনাগুলি নিয়ে মণিপুর পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়াকে ‘গয়ংগচ্ছ এবং ‘অলসতায় ভরা’ বলেছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেপি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ।
গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে গত ১৯ জুলাই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। জানা যায় সেটি গত ৪মে কংপোকপি এবং থৌবল জেলার সীমানায় তোলা। ওই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: Parliament: পেশ জন্ম-মৃত্যু নথিভুক্তি সংশোধনী বিল, তবে পাশ করানোর চেষ্টা করল না মোদী সরকার
সরকার এদিন জানিয়েছে, এ পর্যন্ত অশান্তির ঘটনায় ৬ হাজারের বেশি FIR দায়ের হয়েছে। জিরো এফআইআরগুলিকে রেগুলার এফআইআর হিসাবে ট্রান্সফার করা হচ্ছে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ৬ হাজার এফআইআরের ভিত্তিতে মাত্র ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাতে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud) ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে মণিপুর পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করতে অপারগ। অধিকাংশ এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্তে হয় অতি সামান্য অগ্রগতি হয়েছে, নয়তো কিছুই হয়নি। এতে প্রশাসন এবং আইনের শাসনের উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।”
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, ‘‘মণিপুর পুলিশ পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারিয়েছে।’’ গত তিন মাসের হিংসায় রাজ্য জুড়ে খুন হয়েছেন দেড়শোর বেশি মানুষ। ঘরছাড়ার সংখ্যা ৬০ হাজারের উপর। তবুও গ্রেফতারির সংখ্যা ‘অত্যন্ত কম’ হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। এ বিষয়ে জবাবদিহি করার জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হিংসাদীর্ণ ওই রাজ্যের পুলিশ মহানির্দেশক (ডিজি)-কে তলব করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, সোমবার দুপুর ২টোর মধ্যে সশরীরে হাজির হতে হবে মণিপুর পুলিশের ডিজিকে।