মণিপুরে নগ্ন দুই মহিলাকে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনার ভিডিও (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি The News Nest) ঘিরে তোলপাড় গোটা দেশ। কিন্তু ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার অনেক আগেই নাকি এই ঘটনার খবর পেয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। কিন্তু মহিলাদের বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের সেই অভিযোগ কার্যত এড়িয়েই গিয়েছিল মহিলা কমিশন! এবার তেমন তথ্য়ই সামনে এল।
বুধবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মণিপুরের ওই ভিডিয়ো ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। ছবিটি গত ৪ মে তোলা বলে দাবি মণিপুর পুলিশের। মহিলাদের উপর নির্যাতনের ওই ঘটনার নিয়ে গত ১২ জুন জাতীয় মহিলা কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছিল বলে শুক্রবার ইন্ডিয়া টুডেতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। ওই অভিযোগপত্রের একটি প্রতিলিপিও প্রকাশ করা হয়েছে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে। সেখানে মোট তিন জন মহিলার উপর যৌন নির্যাতন এবং তাঁদের মধ্যে দু’জনকে নগ্ন করে হাঁটানোর অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: Kedarnath Temple: মন্দির চত্বরে প্রেম প্রস্তাবের জের! কেদারনাথে নিষিদ্ধ মোবাইল
দুই সমাজকর্মী এবং উত্তর আমেরিকান মণিপুর আদিবাসী সংস্থার প্রতিনিধিরা জাতীয় মহিলা কমিশনে অভিযোগ জানানোর আগে নির্যাতিতার সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, মণিপুরে মেইতেইরা যেভাবে কুকি-জোমি আদিবাসী মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতন করছে, তা অত্যন্ত নক্ক্যারনজক। কিন্তু অভিযোগ জানিয়েও আখেরে কোনও লাভ হয়নি।
জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা শুক্রবার কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, মণিপুরে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অনেকগুলি অভিযোগই তাঁদের নজরে এসেছিল। এ বিষয়ে তিনি দায় চাপিয়েছেন সে রাজ্যের বিজেপি সরকারে কাঁধে। রেখা শুক্রবার বলেন, ‘‘গত তিন মাসে আমরা তিন বার মণিপুর সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি।’’ তবে এরপরই সাফাই দিয়ে যোগ করেন, মণিপুর থেকে অনেক মিথ্যে অভিযোগও উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগকারীরা মণিপুরের ছিলেনও না।
প্রশ্ন উঠছে, বাংলায় কোনও যৌন হেনস্তার খবর পেলেই পৌঁছে যায় জাতীয় মহিলা কমিশন। কিন্তু বিজেপি সরকার অধীনস্ত মণিপুর থেকে ভয়ংকর অভিযোগ পেয়েও কেন উদাসীন রইল তারা? উত্তর অধরা।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল মণিপুরে। পরের দিনই থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার অদূরে ওই দুই মহিলার উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলের অদূরেই কঙ্গপকপি জেলার সীমানা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট সক্রিয় হয়েছে, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ শুক্রবারের মধ্যে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকারের কাছে। ঘটনাচক্রে, ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই সক্রিয় হয়েছে বিজেপি শাসিত মণিপুরের পুলিশ। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।
আরও পড়ুন: Gyanvapi Mosque Survey: জ্ঞানবাপী মন্দির না মসজিদ? ASI সমীক্ষার অনুমতি আদালতের