ইতিহাস বলছে, ১৯৭৮ সালের বিধানসভা ভোটে মেঘালয়ে ‘অল পার্টি হিল লিডার্স কনফারেন্স’ নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছিল। সেই শেষ বার। তার পর থেকে গত সাড়ে ৪ দশক ওই রাজ্য ভোট পরবর্তী জোটের সরকার দেখেছে। পর পর ৯টি বিধানসভা ভোটের পর প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলির নেতাদের একাংশ হাত মিলিয়ে ক্ষমতা দখল করেছেন। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না।
বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যে এনপিপি জয়ী হয়েছে ১৭ আসনে। এগিয়ে রয়েছে ৮ আসনে। শতাংশের হিসেবে এনপিপি পেয়েছে ৩১.৩৭ শতাংশ ভোট। প্রধান বিরোধী দল হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে হয়েছে ইউডিপি। ১০টি আসনে জয়ের পাশাপাশি ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তারা। দখলে ১৬.৩৩ শতাংশ ভোট।
প্রাক্তন সহযোগী দল ইউডিপির ১১ বিধায়ককে পাশে পেলেই তারা অনায়াসে স্থায়ী সরকার উপহার দিতে পারবে মেঘালয়বাসীকে। ২টি আসনে জেতা বিজেপিও যে সেই সরকারকে সমর্থন জানাতে পারে তা স্পষ্ট হয়েছে এনপিপি প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার সঙ্গে অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বৈঠকে।
আরও পড়ুন: Uber, Ola and Rapido bike taxi banned: দিল্লিতে নিষিদ্ধ সব বাইক ট্যাক্সি, নোটিস প্রশাসনের
অন্যদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিজেপি ও কংগ্রেসের হারে পিছনে ফেলেছে তৃণমূল। ৩ আসনে জয় ও ২টি আসনে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি ঘাসফুল শিবিরের ঝুলিতে রয়েছে ১৩.৭২ শতাংশ ভোট। আরও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে কংগ্রেস জিতেছে মাত্র ৫ টি আসনে। তবে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ১২.২৩ শতাংশ। অন্যদিকে সর্বস্ব নিয়ে লড়াই করার পরও বিজেপি জিতেছে মোটে ২টি আসনে। এখনও এগিয়ে রয়েছে একটি মাত্র আসনে। প্রাপ্ত ভোটের হার মাত্র ৯.২৬ শতাংশ।
মেঘালয়ের বিধানসভা ভোটে ইউডিপি, এইচএসপিডিপি, পিডিএফের মতো নির্দিষ্ট এলাকা এবং জনজাতি উপগোষ্ঠী ভিত্তিক দল রয়েছে। প্রতি বারের মতো এ বারও তারা নিজস্ব জনসমর্থনের অঙ্ক মিলিয়ে আসন জিতেছে। সে রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, আলাদা ভাবে লড়াই করে কয়েকটি আসনে জেতার পরে ওই দলগুলি ‘হাওয়া বুঝে’ শক্তিশালী দলের পাশে দাঁড়ায়। ২০১৮-র বিধানসভা ভোটে ২১টি আসনে জিতে একক বৃহত্তম দল হয়েও ক্ষমতা দখল করতে পারেনি কংগ্রেস। বিজেপি, ইউডিপির মতো দলের সঙ্গে ভোট পরবর্তী সমঝোতা করে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ২০টি আসনে জেতা এনপিপির নেতা কনরাড। এ বারও ত্রিশঙ্কু ইতিহাসের গতি তারই পক্ষে।
আরও পড়ুন: Meghalaya: ত্রিশঙ্কুর পথে মেঘালয়, ৩টি আসনে জিতল তৃণমূল, একটি আসন থেকে ১০ ভোটে !