কুসংস্কারের রূপ কতখানি ভয়ংকর হতে পারে, তার প্রমাণই মিলল সম্প্রতি পুণের এক ঘটনায়। ‘অঘরী পুজো’র জন্য জোর করে ঋতুস্রাবের রক্ত ব্যবহার করেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ২৭ বছরের যুবতী।
পুলিশকে দেওয়া বয়ানে নির্যাতিতা বলেন, ২০১৯ সালের জুন মাস থেকেই তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালিয়ে আসছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এমনকী গত বছর গণেশ পুজোর সময় অঘরী পুজোর জন্য জোর তাঁর ঋতুস্রাবের রক্ত সংগ্রহ করে তারা। মহারাষ্ট্রের বিড জেলায় যুবতীর শ্বশুরবাড়িতেই এই সমস্ত ঘটনা ঘটে। কিন্তু মারধরের ভয়েই কার্যত মুখ বুজে সব সহ্য করছিলেন তিনি। তবে পুণেতে বাপের বাড়ি ফেরার পরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতোই গত মঙ্গলবার বিশ্রান্তওয়াড়ি পুলিশ স্টেশনে এই সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে অভিযোগকারীর মহিলার ঋতুস্রাবের রক্ত যেই অর্থের বিনিময়ে বিক্তি করা হয়েছে, তা রীতিমতো হতবাক করে দেওয়ার মতো।
আরও পড়ুন: বিমানে যাত্রীর গায়ে প্রস্রাব, অভিযুক্তের বিমানে ওঠা নিষিদ্ধ করল সংস্থা
জানা গিয়েছে, মহিলার ঋতুস্রাবের রক্ত ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে অঘোরী পুজোর জন্য। এই ঘটনার ওপর নজর রেখেছে রাজ্য মহিলা কমিশনও। সাত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ (অপ্রাকৃতিক অপরাধ), ৩৫৪(এ) (যৌন হেনস্থা), ৪৯৮(এ) (মহিলাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা), ৫০৪ (শান্তি ভঙ্গের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান), ৩২৩ (স্বেচ্ছায় জখম করা) ধারায় মামলা করা হয়েছে। তাছাড়া আইপিসির ৩৪ ধারাতেও মামলা করা হয়েছে। আর তাছাড়া মহারাষ্ট্র মানব বলিদানের নির্মূল এবং প্রতিরোধ আইন, অঘোরী অনুশীলন এবং কালো জাদু আইনের ধারাগুলিতেও মামলা করা হয়েছে।
মহারাষ্ট্রর মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রুপালি চাকঙ্কর জানান, নির্যাতিতার থেকে জোর করে ঋতুস্রাবের রক্ত সংগ্রহ করে অঘরী পুজোর জন্য তা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করত অভিযুক্তরা। অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। পুণের মতো উন্নত শহরেও যে মহিলাদের এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়, ভাবতেও অবাক লাগে। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এও বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: Japanese Sexually Harassed: হোলিতে জাপানি মহিলাকে যৌন হেনস্থা দিল্লিতে, গ্রেপ্তার এক নাবালক-সহ ৩