সবজিওয়ালার টাকা বাকি! তাই গত এক সপ্তাহ ধরে স্রেফ ভাত আর এক চিমটে হলুদ, এটাই দেশের একটি স্কুলের মিড ডে মিলের মেনু! খিদের জ্বালায় তাইই গোগ্রাসে খাচ্ছে পড়ুয়ারা! ঘটনাটি ছত্তীসগড়ের বিজাকুড়া গ্রামের বিজাকুড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
যাঁরা মিড ডে মিলের রান্নার দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য, সবজিওয়ালার টাকা বাকি থাকায় তিনি সবজি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। রাঁধুনি সুখিয়া দেবী বলেন, “আমাদের শাক-সবজি না দিলে আমরাই বা কীভাবে রান্না করব। তাই কখনও ডাল ভাত, কখনও শুধু ভাত দিতে হচ্ছে!” সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তাঁর বক্তব্য, মিড ডে মিলের খাতে বরাদ্দ অর্থ না পাওয়ায় এই সমস্যা। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক দেবেন্দ্রনাথ মিশ্র।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক এই ঘটনার জন্য মিড ডে মিল সরবরাহকারীদেরই দায়ী করেছেন। অন্য দিকে, আবার মিড ডে মিল সরবরাহকারীরা পাল্টা দাবি করেছেন, তাঁদের পাওনা মেটানো হচ্ছে না। পরস্পরের দিকে দায় ঠেলাঠেলির মাঝে পড়ে শিশুরা কেন তাদের প্রাপ্য মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী এই ঘটনার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যেও পারস্পরিক দোষারোপের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে।
পরিস্থিতির জন্য সরকার এবং স্কুল কর্তৃপক্ষর উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন বাসিন্দারা। ছত্তীসগড়ের মানুষের অভিযোগ, শুধু এই একটি স্কুলে নয়, রাজ্যের একাধিক স্কুলে মিড ডে মিলের হালটা এখন এরকমই। যদিও রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী লক্ষ্মী রাজওয়াড়ের দাবি, প্রতিটি স্কুলেই পড়ুয়াদের পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়া হচ্ছে।
পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করা, একই সঙ্গে পুষ্টির জোগানের জন্য ২০০২ সাল থেকে সারা দেশের সরকারি স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের জন্য চালু করা হয়েছে মিড ডে মিল বা দুপুরের খাবারের। নিয়ম অনুযায়ী, পড়ুয়াদের সপ্তাহে অন্তত একদিন মাছ বা মাংস, দু’দিন ডিম দেওয়ার কথা। এছাড়াও ডাল, সবজি, সওয়াবিন দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সরকারি ওই নিয়ম বহু ক্ষেত্রেই যে স্রেফ কাগুজে বন্দি হয়ে রয়ে গেছে, এঘটনা আরও একবার সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।