রাজনীতিবিদ মুখতার আনসারির (Mukhtar Ansari) শেষকৃত্যে নামল মানুষের ঢল। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, ভিড় সামলাতে হিমশিম খেল পুলিশ। গাজিপুরের কালি বাগ কবরস্থানে মা-বাবার পাশেই সমাধিস্থ করা হল মুখতারকে। এদিন কবরস্থানের বাইরে বিপুল মানুষ উপস্থিত হন। ভিড় সরাতে লাঠি চার্জও করতে হয় পুলিশকে।
শনিবার সকালে মুখতার আনসারির শেষকৃত্যের বিশাল শোকযাত্রা রওনা হয় বাড়ি থেকে।জানাজার নামাজে সামিল হতেহাজির ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। কোনও ধরনের অশান্তি এড়াতে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয় আনসারির বাড়ি ও কবরস্তানের সামনে। একসময় হুড়োহুড়ি, ঠেলাঠেলিতে বাড়ির লোকেরাই দেহের কাছে পৌঁছাতে পারছিলেন না। ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিল পুলিশ। শেষপর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসন ঠিক করে, কেবলমাত্র পরিবারের লোকজনকেই কবরস্তানে ঢুকতে দেওয়া হবে। তা শুনে কবরস্তানের বাইরে মুখতার জিন্দাবাদ স্লোগান তোলে জনতা। বেশ কিছু মানুষ ব্যারিকেড ভেঙে কবরস্তানের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে পুলিশি তৎপরতায় তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের উপস্থিতিতে কবরস্থ করা হয় মুখতারকে।
#WATCH | Ghazipur, UP: Chaos erupted during the burial rites of gangster-turned-politician Mukhtar Ansari after his supporters broke the barricading in order to enter the cemetery ground. pic.twitter.com/EgDOkcBPU2
— ANI (@ANI) March 30, 2024
বৃহস্পতিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় মুখতারের। সন্ধ্যায় আচমকাই বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। বিকেলের খাওয়া শেষের পর থেকেই তিনি বমি করতে থাকেন। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা জেলের ভিতরেই চিকিৎসা শুরু করেন। শেষপর্যন্ত অসুস্থতা বাড়লে ডাক পড়ে চিকিৎসকদের। ৮টা ২৫ নাগাদ মুখতারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁকে চিকিৎসা করছিল ৯ চিকিৎসকের এক দল। কিন্তু শেষপর্যন্ত হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শুক্রবার গভীর রাতে বান্দার রানি দুর্গাবতী হাসপাতাল থেকে মুখতারের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গাজিপুরের পৈতৃক ভিটেয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ২৪টি ভ্যান এবং অ্যাম্বুল্যান্স-সহ মোট ২৬টি গাড়ি ছিল কনভয়ে। ৪০০ কিলোমিটার যাত্রাপথে প্রয়াগরাজ, ভাদোহী, কৌশাম্বী, বারাণসীর মতো জেলাগুলিতে ছিল পুলিশি নজরদারি। দেহবাহী অ্যাম্বুল্যান্সে ছিলেন মুখতারের দুই পুত্র উমর এবং আব্বাস। মাউয়ের বিধায়ক আব্বাসও বর্তমানে জেলবন্দি। আদালতের অনুমতি নিয়ে পিতার শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। গাজিপুরের বাড়িতে শুক্রবার গভীর রাতে পরিবারের তরফে মুখতারের দেহ গ্রহণ করেন তাঁর দাদা তথা প্রাক্তন বিধায়ক সিবগাতুল্লা আনসারি এবং তাঁর পুত্র তথা মহম্মদাবাদের সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক সুহেব।
অন্যদিকে, গত ১৯ মার্চ মুখতারকে রাতের খাবারের সঙ্গে বিষ দেওয়া হয়েছিল, এমনই অভিযোগ করেছেন উমর। এই ব্যাপারে তাঁরা বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান তিনি। মুখতারের কথায়, ‘‘বিচার বিভাগের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, মুখতারের ঠাকুর্দা মুখতার আহমদ আনসারি ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি। তাঁর অন্য এক দাদু মহম্মদ উসমান ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার। বীরত্ব ও সাহসিকতার জন্য উসমানকে মরণোত্তর ‘মহাবীর চক্র’ দেওয়া হয়। বলা হয়, কাশ্মীর ভারতের অন্তর্গত থাকতে পেরেছে যাঁদের জন্য তাঁদেরই অন্যতম উসমান। এদিকে ভারতের প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি সম্পর্কে কাকা হন তাঁর।