ওরলির হিট অ্যান্ড রান মামলায় অবশেষে গ্রেফতার হল মূল অভিযুক্ত মিহির শাহ। দুর্ঘটনার তিনদিন পর মুম্বাই পুলিশ মিহিরকে গ্রেফতার করেছে। ৭ জুলাই দুর্ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল মিহির।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডের দলের নেতা রাজেশ শাহর ছেলে মিহির। বয়স ২৪ বছর। অভিযোগ, গত শনিবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে জুহুর একটি বারে মদ্যপান করেন মিহির। এর পর তিনি ‘লং ড্রাইভে’ নিয়ে যেতে বলেন ড্রাইভারকে। ওরলিতে পৌঁছনোর পর নিজেই গাড়ি চালাবেন বলে জেদ ধরেন। মিহির স্টিয়ারিংয়ে বসার কিছুক্ষণ পরেই একটি স্কুটারে ধাক্কা মারেন। স্কুটারে ছিলেন মাছ বিক্রেতা প্রদিক নাকভা এবং তাঁর স্ত্রী কাবেরী নাকভা। অন্য দিনের মতোই রাতে মুম্বই বন্দরে পাইকারি বাজারে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। মিহিরের গাড়ি পিষে দেয় কাবেরীকে। প্রদিক অল্প আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। শুরুতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজেশ এবং ড্রাইভারকে হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। একে একে আরও অনেককেই হেফাজতে নেওয়া হলেও মিহির পলাতক ছিলেন। বন্ধ ছিল তাঁর ফোনও। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পুলিশের জালে ধরা দিলেন তিনিও।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন সকালে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মিহির নিজেই। তাঁর পাশে যাত্রীর আসনে বসে ছিলেন গাড়ির চালক রাজঋষি বিদাওয়াত। দুর্ঘটনার পরে বান্দ্রা পূর্বের কালা নগরে গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর মিহির তার বাবা রাজেশ শাহকে ফোন করে। তার বাবা তাকে চালকের জায়গায় বসার পরামর্শ দেন। সেই মতো তিনি স্টিয়ারিং ছেড়ে চালকের পাশের আসনে গিয়ে বসেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ছেলেকে বাঁচাতে চালকের ওপর দোষ চাপানোর পরিকল্পনা ছিল রাজেশ শাহের। গাড়ির চালক এখনও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
মিহির শাহের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী ধারা ১০৫ (অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ড), ২৮১ (বেপরোয়াভাবে এবং অবহেলা করে গাড়ি চালানো মানব জীবনকে বিপন্ন করে), ১২৫-বি (জীবন এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিপন্ন করে), ২৩৮, ৩২৪ (৪) (দুর্নীতি করা) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মোটর যান আইনের ১৮৪, ১৩৪-এ, ১৮৭ ধারার অধীনেও অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, মিহিরের মা ও বোনেরা তাঁকে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করছিলেন। এখন দেখার, তাঁদেরও অভিযুক্তর তালিকাভুক্ত করা হয় কিনা। জানা গিয়েছে, মুম্বই থেকে ৬৫ কিমি দূরে ভিরারের এক অ্যাপার্টমেন্টে লুকিয়ে ছিলেন মিহির। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে।