অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজক্লিক-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লি পুলিশ কর্তৃক তাঁর গ্রেফতার ও রিমান্ডকে অবৈধ ঘোষণা করেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, গ্রেপ্তারের কারণ এবং রিমান্ডের অনুলিপি প্রবীর পুরকায়স্থ বা তাঁর আইনজীবীকে সরবরাহ করা হয়নি। তাই এই গ্রেপ্তার অবৈধ।
লাইভ ল’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, রায় ঘোষণার সময় বেঞ্চ জানায়, “এই মামলার একাধিক শুনানির ফলে এই বিষয়টি আদালতের কাছে একদম স্পষ্ট যে, ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর রিমান্ডের আদেশ পাসের আগে রিমান্ড আবেদনের অনুলিপি এবং লিখিতভাবে গ্রেপ্তারের কারণ অভিযুক্ত বা তাঁর আইনজীবীকে জানায়নি দিল্লি পুলিশ। এর ফলে আবেদনকারীকে (প্রবীর পুরকায়স্থ) গ্রেফতার এবং রিমান্ডের আবেদন অবৈধ। পঙ্কজ বানসাল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় অনুযায়ী আবেদনকারী হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়ার অধিকারী। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হোক।”
বেঞ্চ আরও জানায়, “গ্রেফতার এবং রিমান্ড যেহেতু বেআইনি তাই আমরা প্রবীর পুরকায়স্থকে জামিন ছাড়াই মুক্তি দিতাম। কিন্তু যেহেতু চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, তাই ট্রায়াল কোর্টের সন্তুষ্টির জন্য জামিন এবং বন্ড প্রদানের সাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হবে তাঁকে।”
In a major development, the Supreme Court on Wednesday (May 15) declared as illegal NewsClick founder and Editor-in-Chief Prabir Purkayastha’s arrest by the Delhi police and his remand in a case under the Unlawful Activities (Prevention) Act 1967.
Read more:… pic.twitter.com/921TBWKFXV— Live Law (@LiveLawIndia) May 15, 2024
প্রসঙ্গত, এই মাসের শুরুতেই আদালতে ৮০০ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। সেখানে আরও অভিযোগ করা হয়, টাকা নিয়ে চিনের হয়ে প্রোপাগান্ডা চালাত এই সংবাদমাধ্যম। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ-সহ চার্জশিট পেশ করে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, প্রবীর পুরকায়স্থ সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য টাকা সংগ্রহ করতেন। জঙ্গি সংস্থা লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তিনি। এই ক্রিয়াকলাপের জন্য নিউজক্লিকের মাধ্যমে ৯১ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল বলেও দাবি ছিল পুলিশের। শুধু তাই নয়, মাওবাদীদেরও অর্থ সাহায্যের অভিযোগ তোলা হয়েছিল চার্জশিটে।
গত বছরের ৩ অক্টোবর চিনের হয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগে ইউএপিএ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয় প্রবীরকে। পাশাপাশি বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনেও অভিযুক্ত করা হয়েছিল তাঁকে। গ্রেপ্তার করা হয় সংস্থার এইচআর অমিত চক্রবর্তীকেও। তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন তাঁরা।
দিল্লি পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার ও রিমান্ডকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুরকায়স্থ। শুনানির সময় আদালত দিল্লি পুলিশকে প্রশ্ন করেছিল, আবেদনকারীর আইনজীবীকে না জানিয়ে কেন সকাল ৬ টার আগেই তাঁকে তড়িঘড়ি UAPA আইনে গ্রেফতার করা হল? কেন পুরকায়স্থ বা তাঁর আইনজীবীকে জানানোর আগেই রিমান্ডের আদেশ পাস করানো হয়েছিল? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ।
৩০ এপ্রিল এই মামলার শুনানি শেষ হয়। কিন্তু রায়দান স্থগিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত আগেই জানিয়ে রেখেছিল যদি গ্রেফতার অবৈধ প্রমাণিত হয়, তাহলে গ্রেফতারি বাতিল করে আবেদনকারীকে মুক্তি দেবে আদালত। বুধবার তেমনই নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।