কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে বেঙ্গালুরুর এক আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে তোলা আদায়ের। কর্নাটকের ‘জনাধিকার সংঘর্ষ সংগঠন’-এর তরফে আদর্শ আইয়ার নামে এক ব্যক্তি ওই অভিযোগ করেছেন। শনিবার সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এমন নির্দেশ দিল আদালত।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে খারিজ করেছিল শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে বন্ড কেনাবেচা সংক্রান্ত সব তথ্য প্রকাশ করতে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ও নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। ওই রায়ে নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ, কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হিসাবে দেখানো হয়েছিল বিষয়টিকে।
অভিযোগ কেবল নির্মলার বিরুদ্ধে নয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, কর্নাটকের বিজেপি নেতা নলীনকুমার কাতিল ও বি ওয়াই বিজয়েন্দ্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন আদর্শ। তাঁর অভিযোগ, কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে কোটি কোটি টাকার ইলেক্টোরাল বন্ড কিনতে বাধ্য করা হয়েছিল ইডি দিয়ে তল্লাশি চালানোর চাপ দিয়ে। বিজেপির জাতীয় ও রাজ্য স্তরের নেতারা এতে জড়িত বলে। আর সেই সঙ্গেই তিনি অভিযুক্ত করেছেন নির্মলা-সহ গেরুয়া শিবিরের নেতানেত্রীদের। আদালত দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ১৭(এ) ধারায় এফআইআর রুজু করে তিন মাসের মধ্যে নির্মলা ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি ‘অসাংবিধানিক’ বললেও নির্বাচনী বন্ডের পক্ষে সওয়াল করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, ভোটে কালো টাকা ব্যবহার বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই ওই ব্যবস্থা (নির্বাচনী বন্ড) চালু করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি সৎ প্রতিফলন দেখা যায়, সকলেই এক দিন এ নিয়ে অনুশোচনা করবে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি কখনওই বলিনি একটি সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত। কিন্তু বিরোধী দলগুলি নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছে।’’ অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লোকসভা ভোটের আগে বলেছিলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ড আদৌ কোনও স্বচ্ছতার কর্মসূচি নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে বড় তোলাবাজির চক্র। আর নরেন্দ্র মোদী তার মাস্টারমাইন্ড (মূলচক্রী)।’’ নির্মলার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের জন্য আদালতের নির্দেশে বিরোধীদের অভিযোগ কার্যত মান্যতা পেল বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।