মাইক বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে শনিবার সকাল থেকেই তোলপাড় দেশ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া বিরোধী কোনও মুখ্যমন্ত্রীই এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তবে সকলের নজর কাড়ল নীতীশ কুমারের অনুপস্থিতি। বিহারের দুই উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধরি এবং বিজয়কুমার সিংহকে দিল্লির বৈঠকে পাঠিয়েছেন জেডিইউ (জনতা দল ইউনাইটেড) নেতা নীতীশ। ঘটনাচক্রে, বিহারের দুই উপমুখ্যমন্ত্রীই বিজেপির। কেন নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিলেন না নীতীশ, তা এখনও স্পষ্ট নয়। জেডিইউ মুখপাত্র নীরজ কুমার সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘এই প্রথমবার নয়, মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও নীতি আয়োগের বৈঠকে অনুপস্থিত থেকেছেন। তখন বিহারের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রীরা। এ বার রাজ্যের দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রীই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। নীতি আয়োগের চারজন সদস্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই বিহারের। তাঁরাও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন।’
ভারতীয় রাজনীতিতে সবথেকে পিচ্ছিল ব্যক্তিত্ব নীতীশকুমার। তাঁর রাজনৈতিক কৌশল বোঝা সহজ নয়। তিনি কখন তার রাজনৈতিক অভিমুখ কোনদিকে বদল করবেন,সেদিকে যেমন বিরোধীদের নজর থাকে, তেমনই সজাগ দৃষ্টি রাখে তাঁর সহযোগী ও শরিকরা। ফলে মুখে বিজেপি যায় বলুক,এই ঘটনায় তারা যে খানিকটা অস্বস্তিতে পড়েছে তা বলাই বাহুল্য। সেই অর্থে দেখতে গেলে নীতি আয়োগের বৈঠককে আর যায় হোক সফল বলা যায় না কোনো অর্থেই। বিজেপি বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীরা নাহয় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলে যোগ নাই দিতে পারেন, তবে শরিকের একী ব্যবহার ! এবারের বাজেট তো দুই শরিককেই উৎসর্গ করেছে বিজেপি। তারপরেও নীতীশের গোঁসা কিসে, তা স্পষ্ট হয়নি।
মোদি সরকারের আগের আর সে দাপট নেই। একা সরকার গড়তে পারেনি বিজেপি। নীতিশ ও নাইডুর কাঁধে ভর দিয়ে চলছে কেন্দ্রের সরকার। এদিনে সরকারের সিদ্ধান্ত এবং পলিসি নিয়ে নীতি আয়োগের বৈঠকে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ বারের বৈঠকে মূলত ২০৪৭ এর ‘বিকশিত ভারত নিয়েই আলোচনা করেন তিনি। ইন্ডিয়া জোটের কোনও মুখ্যমন্ত্রীই নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র বিরোধী প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকলেও তিনি মাঝপথে তা বয়কট করে বেরিয়ে আসেন। তবে নীতি আয়োগের বৈঠকে এদিন নীতীশের অনুপস্থিতি ভাবাচ্ছে বিজেপি। অস্বস্তি তাদের চোখে মুখে বিহারের বসে কি সে সব উপভোগ করছেন নীতীশ? উত্তর দেবে সময়।