মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হওয়ার পর থেকে বোধহয় সবচেয়ে বেশি আলোচিত রাজনীতিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমা। তিনি এনডিএতেই থাকবেন নাকি ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেবেন, এই নিয়ে নানা জল্পনা শোনা যাচ্ছিল। যদিও শেষপর্যন্ত মোদীদের সঙ্গ যে নীতীশ ছাড়ছেন না তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই এক জেডিইউ নেতা দাবি করলেন, ইন্ডিয়া জোট নাকি তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর কুরসি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু নীতীশ তা অগ্রাহ্য করেছেন।
‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জেডিইউর অন্যতম শীর্ষনেতা কেসি ত্যাগী বলেন, “নীতীশ কুমার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন।” তার পরেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবিরের নাম না করে ত্যাগীর কটাক্ষ, “যাঁরা এক সময় নীতীশকে ‘ইন্ডিয়া’র আহ্বায়ক হতে দেননি, তাঁরাই এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন।” একই সঙ্গে ত্যাগী জানিয়ে দেন, নীতীশের তরফ থেকে এই প্রস্তাব সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করে দেওয়া হয়েছে এবং জেডিইউ স্থির করেছে যে, তারা বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ-র সঙ্গেই থাকবে।
কংগ্রেস অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। হাত শিবিরের নেতা কে সি বেণুগোপাল বলেছেন, এমন কিছুই ঘটেনি। তাঁর কথায়, ”এমন কোনও তথ্য আমাদের হাতে নেই। উনি যে কী বলছেন, তা উনিই জানেন।” এ বার বিজেপি একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। পেয়েছে ২৪০টি আসন। তাই কেন্দ্রে সরকার গড়তে পদ্মশিবিরকে অনেকাংশেই নির্ভর করতে হচ্ছে এনডিএ-র দুই শরিক দল জেডিইউ এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল টিডিপি-র উপরে। নীতীশের দল এ বার বিহারে বিডেপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়়ে ১২টি আসন পেয়েছে।
অন্য দিকে, যাবতীয় বুথফেরত সমীক্ষার ফলকে ভুল প্রমাণিত করে ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩৪টি আসন। ৫৪৩ আসনবিশিষ্ট লোকসভায় সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় জাদুসংখ্যা ২৭২। ফলে নীতীশ কিংবা চন্দ্রবাবু এনডিএ শিবির ছেড়ে ‘ইন্ডিয়া’য় শামিল হলে নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাবে। নীতীশ এবং চন্দ্রবাবু— দুই নেতাই অতীতে একাধিক বার শিবির বদল করেছেন। তা ছাড়া নিজেদের রাজ্যকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। তাই এনডিএ-তে তাঁদের রাজনৈতিক মধুমাস কত দিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।