পারস্পরিক মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু তা অতিক্রম করতে হবে নমনীয়তা রেখে। নিজেদের আদর্শকে সামনে রেখে একজোট হয়ে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে দেশের ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে বিজেপিকে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পটনার বাড়িতে ১৫টি বিরোধী দলের বৈঠক শুক্রবার বিকেলে এই বার্তা দিল।
আগামী বছর লোকসভা ভোটে বিজেপির তৃতীয়বার ক্ষমতা দখল রুখতে বিরোধী জোট গড়ার জন্য সমমনোভাবাপন্ন দলগুলির শীর্ষ নেতা-নেত্রীদের বৈঠকে ডেকেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। পটনায় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ওই বৈঠক হয়। দেশের বিজেপি বিরোধী সব দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার বেলা বারোটায় শুরু হয়েছিল বৈঠক। চলে বিকেল চারটে পর্যন্ত। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ফের একবার রনকৌশল চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসা হবে। আগামী ১২ জুলাই ওই বৈঠক হবে কংগ্রেস শাসিত রাজ্য হিমাচল প্রদেশের শিমলায়। কংগ্রেসের তরফে সেই বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে জানান নীতীশ৷
আরও পড়ুন: Air India: ককপিটে বান্ধবীর সঙ্গে একান্ত যাপন! সাসপেন্ড দুই পাইলটকে
বিরোধী নেতাদের বৈঠকে থাকলেও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন না দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে নীতীশ কারও নাম না করে বলেন, ‘‘কয়েক জনের বিমান ধরার কথা ছিল। তাঁরা তাই চলে গিয়েছেন।’’ পটনার বৈঠককে জোটের প্রথম পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে। জোটের ‘মুখ’ কে হবেন, তা ভোটের আগে না পরে ঠিক হবে— সে সব কথা আলোচনার সময় এখনও আসেনি। কিন্তু শুক্রবার যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী বৈঠকের আয়োজক নীতীশ যে ভাবে সকলের আগে রাহুলকেই জোটের তরফে প্রথম মুখ খোলার অনুরোধ জানিয়েছেন, তা যথেষ্ট ‘তাৎপর্য’ বহন করছে।
রাহুলের পরেই বলেন মমতা। তাঁর প্রস্তাবেই পটনাকে এই বৈঠকের ‘উপযুক্ত স্থান’ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। মমতা বলেন, ‘‘আমরা একজোট। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওরা (বিজেপি) মনে করে, ইতিহাস বদলে দিতে হবে! আমরা বলতে চাই, বিহার থেকেই শুরু হবে ইতিহাসরক্ষার লড়াই।’’ শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, মেহবুবা মুফতির মতো নেতারাও পারস্পরিক মতবিরোধ দূরে সরিয়ে একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেছেন।
তৃণমূলের একাংশের দাবি, রাহুলের ‘নমনীয়’ হওয়ার বক্তব্য লোকসভা নির্বাচনে মমতার ‘তত্ত্ব’ (যে দল যেখানে শক্তিশালী, তাকে সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার সুযোগ দিতে হবে। অর্থাৎ, বাংলায় আসনরফা বা সমঝোতা বা জোটের ক্ষেত্রে তৃণমূলই শেষ কথা বলবে)-এর দিকে ইঙ্গিত করছে। অনেকের মতে, রাহুল ‘নমনীয়’ হওয়ার কথা বলে মমতাকে বার্তা দিলেন। যদিও কংগ্রেস মনে করছে, রাহুল আদতে মমতাকেই নমনীয় হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Black Friday: শেয়ার কারচুপি নিয়ে মার্কিন মুলুকে তদন্ত শুরু হতেই ভরাডুবি আদানি গোষ্ঠীর